চকরিয়া উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের একজন জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের ভোটার করার অভিযোগ উঠেছে। এ ইউনিয়নে প্রায় ৪০ জন রোহিঙ্গা বিভিন্ন সময়ে ভোটার হয়েছেন ওই জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে।
এসব রোহিঙ্গারা মিয়ানমার থেকে চকরিয়ার এ ইউনিয়নে এসে প্রথমে বসতি স্থাপন করে বসবাস শুরু করেন। এরপর এদের মধ্যে অনেকে স্থানীয়দের বিয়ে করে স্থায়ী হয়েছেন। পরে কৌশলে এসব রোহিঙ্গারা ইউনিয়নের ভোটার হয়েছেন।
এসব কাজে সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে। শুধু ভোটার নয় ওই জনপ্রতিনিধি তাদেরকে মানিকপুরের সংরক্ষিত বনাঞ্চচলের জায়গা প্লট আকারে বিক্রিও করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রোহিঙ্গা সোলতান আহমদ ভোটার হয়েছেন এ ইউনিয়নের বাসিন্দা হিসেবে। ভোটার তালিকায় তার বাবার নাম দেখানো হয়েছে ছৈয়দ আলম হিসেবে।
একইভাবে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা দেখিয়ে ভোটার হয়েছেন রোহিঙ্গা আবুল হাশেম। ভোটার তালিকায় তার বাবার নামও লেখা হয়েছে ছৈয়দ আলম। প্রকৃতপক্ষে তারা কেউই ছৈয়দ আলমের ছেলে নয়। আত্মীয়তার সুবাদে পিতার নামের স্থলে ছৈয়দ আলমের নাম বসিয়ে ভোটার হয়েছেন সোলতান আহমদ ও আবুল হাশেম। অথচ ছৈয়দ আলম নিজেও এক সময় রোহিঙ্গা হিসেবে এদেশে এসেছেন।
এছাড়া ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা দেখিয়ে ভোটার হয়েছেন জাহেদুল ইসলাম ও মো. আবদুল্লাহ নামের দুই রোহিঙ্গা। তারা বর্তামানে মানিকপুর বনবিটের অধীনে বনায়নের জায়গা কিনে বসতি স্থাপন করেছেন। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হলেও তারা ভোটার হয়েছেন ৮ নম্বর ওয়ার্ডে।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, সোলতান আহমদ এলাকায় বার্মাইয়া হিসেবে পরিচিত। তিনি ছৈয়দ আলমের ছেলে নয়। অথচ ছৈয়দ আলমকে পিতা দেখিয়ে ভোটার হয়েছেন তিনি। রোহিঙ্গা ভোটার জাহেদুল ইসলামও আহমদ হোছনের ছেলে নয়। একইভাবে সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ৩৫ থেকে ৪০ জন রোহিঙ্গা ভোটার হয়েছেন।
ইতিপূর্বে তারা ভোটার হিসেবে ভোটও দিয়েছেন। পেয়েছেন স্মার্ট কার্ডও। ২০০৬ সালে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা অন্তর্ভুক্ত করে নির্বাচন কমিশন। এসময় তারা ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে ভোটার হন।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। কিভাবে তারা ভোটার হয়েছেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শামুসল তাবরীজ বলেন, রোহিঙ্গা ভোটার হওয়া বিষয় নিয়ে তদন্ত করা হবে। এ বিষয়ে কারো সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।