নিউ ইয়র্ক সিটির আপার ইস্ট সাইডের অভিজাত হোটেল ‘দ্য পিয়ের’-এ সম্প্রতি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শামিল হয়েছিলেন শত শত প্রভাবশালী ভারতীয়-আমেরিকান ব্যক্তিত্ব। দীপাবলি বা দিওয়ালির আবহে অক্টোবরের সন্ধ্যায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতদের তালিকায় ছিলেন বলিউড অভিনেতা থেকে শুরু করে তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার সিইওরা।
চোখ ধাঁধানো পোশাক এবং ভারী গয়না পরে এই ককটেল পার্টিতে হাজির হয়ে একে অন্যের সঙ্গে গল্পে মশগুল হয়েছিলেন আমন্ত্রিতরা।
তবে এই আয়োজন দিওয়ালি উদযাপনের জন্য হলেও যে আলোচনা এই অনুষ্ঠানকে মাত করে রেখেছিল, তা হলো ভারতীয়-আমেরিকান সম্প্রদায়ের সর্বশেষ রাজনৈতিক মাইলফল। কারণ কমালা হ্যারিস দক্ষিণ এশীয় ঐতিহ্যের প্রথম ব্যক্তিত্ব যিনি মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রার্থী। দলের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি অনুমোদন পেয়ে মনোনীত হয়েছেন তিনি। এই বিষয়কে কেন্দ্র করে নিউ ইয়র্কের জাঁকজমকপূর্ণ পার্টির উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো।
রেশমা সৌজানি মনে করেন কমালা হ্যারিসের মধ্যে বহু দক্ষিণ এশীয় নারীই নিজেদের প্রতিফলন দেখতে পান।
‘অল দ্যাট গ্লিটার্স দিওয়ালি বল’ নামক এই অনুষ্ঠানে শামিল ছিলেন ‘ব্র্যাভো’র (যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশন নেটওয়ার্ক) রিয়েলিটি শো ‘দ্য রিয়েল হাউসওয়াইভস অফ নিউ ইয়র্ক সিটি’র প্রথম ভারতীয় ‘কাস্ট’ জেসেল টাঙ্ক।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রসঙ্গে তিনি বিবিসিকে বলেছেন, “এইবারের বিষয়টা (প্রেসিডেন্ট নির্বাচন) একেবারে অনন্য কারণ আমরা এমন একজনকে পেয়েছি যিনি আমদের মঙ্গল চান।” তার ইঙ্গিত মিজ হ্যারিসের দিকে।
একই সুর শোনা গিয়েছে অলাভজনক সংস্থা ‘গার্লস হু কোড’-এর সিইও এবং ২০১০ সালে মার্কিন কংগ্রেসের প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারী প্রার্থী রেশমা সৌজানির কণ্ঠেও। তার কথায়, “আপনি যেটা চোখে দেখতে পাচ্ছেন না, সেটা হতে পারবেন না।”
তিনি মনে করেন কমালা হ্যারিসের মধ্যে বহু দক্ষিণ এশীয় নারীই নিজেদের প্রতিফলন দেখতে পান।
আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এই ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর চ্যালেঞ্জ হলো অভিবাসী জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই ‘উৎসাহ’কে সঞ্চারিত করা। এই ক্রমবর্ধমান অভিবাসী জনগোষ্ঠী ক্যালিফোর্নিয়া ও নিউইয়র্ক ছাড়িয়ে ইতোমধ্যে জর্জিয়া, মিশিগান ও পেনসিলভানিয়ার মতো ব্যাটলগ্রাউন্ড স্টেট অব্দি ছড়িয়ে পড়েছে।
ভারতীয়-আমেরিকানদের উপর ফোকাস
কমালা হ্যারিস এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌড়ে শামিল রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প দু’জনেই কিন্তু ইন্ডিয়ান-আমেরিকানদের নিজের দিকে আকৃষ্ট করার ব্যাপক চেষ্টা করে চলেছেন। কারণ যুক্তরাষ্ট্রে এশীয়-আমেকিরান ভোটারদের মধ্যে বৃহত্তম এবং রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় গোষ্ঠী হলো ভারতীয় আমেরিকানরা।
এই জনসংখ্যাতাত্ত্বিক সুবিধা ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকানদের মধ্যে যে কোনও এক পক্ষের দিকে নির্বাচনি ফলাফল নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
কমালা হ্যারিস প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত, প্রথম নারী এবং প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিত্ব যিনি ২০২০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত হন।
একদিকে যেমন ২০২৪ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌড়ে মিজ হ্যারিসের আচমকা প্রবেশ উল্লেখযোগ্য তেমনই উল্লেখযোগ্য গত এক দশকে ভারতীয়-আমেরিকান সম্প্রদায়ের শুধুমাত্র একটা সম্প্রদায় থেকে রাজনৈতিক শক্তি হিসাবে রূপান্তরিত হওয়ার বিষয়টাও।
কমালা হ্যারিস ছাড়াও চলতি নির্বাচনি চক্রে একাধিক ভারতীয়-আমেরিকান ব্যক্তিত্বের উত্থান দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘রানিং মেট’ জেডি ভান্সের স্ত্রী ঊষা ভান্সও ভারতীয় বংশোদ্ভূত।
এছাড়া বিবেক রামস্বামী এবং নিকি হ্যালি নামক দুই রিপাবলিকানও প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসাবে ওই দলের মনোনয়ন পেতে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন। বিবেক রামস্বামী এবং নিকি হ্যালি দু’জনেই ভারতীয় বংশোদ্ভূত।
পরিসংখ্যান কী বলছে?
যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয়স্তরে ভারতীয়-আমেরিকান ব্যক্তিত্বদের প্রভাবের পাশাপাশি, এই সম্প্রদায়ের সঙ্গে রাজনীতির যোগাযোগও ক্রমশ গভীর হয়েছে। এশিয়ান-আমেরিকান সম্প্রদায় সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহকারী সংস্থা ‘এএপিআই ডাটা’-র তথ্য অনুযায়ী, গত দুই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এশিয়ান-আমেরিকানদের মধ্যে ভারতীয় আমেরিকান ভোটারের সংখ্যা ছিল সবচেয়ে বেশি এবং এই সংখ্যা শ্বেতাঙ্গ ভোটারদের তুলনায়ও বেশি।
২০২০ সালে, ভোট দিতে পারেন এমন ভারতীয়-আমেরিকানদের মধ্যে ৭১% তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন যা ২০১৬ সালের তুলনায় নয় শতাংশ বেশি।
এএপিআই ডাটার সহ-প্রতিষ্ঠাতা কার্তিক রামকৃষ্ণণন মনে করেন, ২০২৪ সালের নভেম্বরেও এই প্রবণতা অব্যাহত থাকবে। তার মতে, প্রার্থী হিসাবে কমালা হ্যারিসের উপস্থিতি (ভোট দেওয়ার যোগ্য এমন) দক্ষিণ এশীয় ভোটারদের সংখ্যাকে ৭৫ শতাংশে পৌঁছে দিতে পারে।
কার্তিক রামকৃষ্ণণ বলেছেন, “দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত কাউকে ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসেবে পাওয়াটা অনেক বড় ব্যাপার ছিল দক্ষিণ এশীয় ভোটারদের কাছে। সেই জায়গা থেকে কাউকে দেশের সর্বোচ্চ পদে আনাটা কিন্তু আরও অনেক বড় বিষয়।”
২০২৪ সালে ‘এএপিআই ডেটা’র ভোটার সংক্রান্ত জরিপ বলছে, ভারতীয়-আমেরিকান ভোটারদের অর্ধেকেরও বেশি (৫৫ শতাংশ) ডেমোক্র্যাটপন্থী আর নিজেদের রিপাবলিকান হিসাবে চিহ্নিত করেন এমন ভোটারের সংখ্যা হলো ২৬ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, ওই জরিপ অনুযায়ী এখনও সংখ্যাগরিষ্ঠ হিসাবে দেখা গেলেও ২০২০ সাল থেকে ডেমোক্র্যাটপন্থী ভারতীয়-আমেরিকানদের সংখ্যা কমছে।
‘কার্নেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস’ এবং ‘ইউগভ’ দ্বারা প্রকাশিত এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, নথিভুক্ত ভারতীয়-আমেরিকান ভোটারদের ৬১ শতাংশ কমালা হ্যারিসকে ভোট দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন আর ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে ভোট দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ৩২ শতাংশ ভোটারের।
ডেমোক্র্যাটিক পার্টির পক্ষে এই সম্প্রদায়ের সমর্থন অব্যাহত থাকলেও সর্বশেষ জরিপে এই সমর্থন মি. ট্রাম্প এবং রিপাবলিকানদের পক্ষে যাওয়ার ‘পরিমিত প্রবণতা’ দেখা গিয়েছে। গবেষকদের মতে এই প্রবণতার বাহক হলেন ভারতীয়-আমেরিকান পুরুষরা, বিশেষত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেছেন এমন তরুণরা।
একই পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে, ৬০ শতাংশের বেশি ভারতীয়-আমেরিকান নারী কমালা হ্যারিসকে ভোট দিতে চান। অন্যদিকে, ৫০ শতাংশ ভারতীয়-আমেরিকান পুরুষ ভোট দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পকে।
কমালা হ্যারিসের পক্ষ কতটা মজবুত?
মিশিগানের ফ্লিন্টের বাসিন্দা এবং পেশায় চিকিৎসক অঞ্জু সাওনির মনে করেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে মিজ হ্যারিসের ঐতিহ্যের তুলনায় চলতি নির্বাচনি দৌড়ে একজন নারী প্রার্থী হিসাবে তার উপস্থিতি এবং প্রজনন অধিকারের প্রতি অঙ্গীকার তার পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য মানুষকে উদ্বুদ্ধ করছে।
অঞ্জু সাওনি বলেছেন, “রোগীদের নিয়ে আমি খুব চিন্তিত। এই দেশে ইতোমধ্যে আমরা স্বাস্থ্য পরিষেবার দিক থেকে পিছিয়ে পড়েছি বিশেষত গর্ভপাতের ক্ষেত্রে নারীদের অধিকার কেড়ে নেওয়ার মতো বিষয়ের কারণে।”
জর্জিয়ার আটলান্টার ডেমোক্র্যাট ও অ্যাটর্নি কীর্তন প্যাটেল বলেন, কমালা হ্যারিস ‘আগুনে ঘি ঢেলেছেন’। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ‘সুইং স্টেটে’ ভারতীয়-আমেরিকান সম্প্রদায় একটা ক্রমবর্ধমান শক্তি।
কীর্তন প্যাটেল জানিয়েছে, তিনি এমন অনেক ভারতীয়কে জানেন যারা মূলত রিপাবলিকানদের ভোট দেন কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পছন্দ না করার কারণে ডেমোক্র্যাটদের ভোট দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
তার কথায়, “ক্যারেক্টার বিষয়টা কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয়, খুব সূক্ষ্মভাবে বলতে গেলে ক্যারেক্টারই (ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে) টার্নিং পয়েন্ট।”
তবে বিভিন্ন ধর্ম, ভাষা, বর্ণ এবং অর্থনৈতিক পটভূমিতে ছড়িয়ে থাকা ভারতীয়-আমেরিকান সম্প্রদায়ের মধ্যেও কমালা হ্যারিসের জাতিগত পরিচয় এবং ভারতের সঙ্গে তার কতটা সংযোগ রয়েছে সে বিষয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কারণ, মিজ হ্যারিসের বাবা জামাইকান এবং তার মা ভারতীয়।
ট্রাম্পের পক্ষ কতটা মজবুত?
এদিকে, ২০২০ সালে প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ভারত সফরে এসেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার কার্যকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এই সম্পর্কের প্রভাব প্রধানমন্ত্রী মোদীর হিন্দু জাতীয়তাবাদী সমর্থকদের মধ্যেও দেখা গিয়েছে।
অন্যদিকে, কেউ কেউ আবার আশঙ্কা করছেন, কমালা হ্যারিস ভারত সাথে শক্তিশালী সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দেবেন না।
দক্ষিণ এশীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে রিপাবলিকানদের সংযোগ স্থাপনের জন্য তৈরি গ্রুপ ‘সাউথ এশিয়ান কোয়ালিশন’-এর চেয়ারপার্সন প্রীতি পাণ্ডিয়া প্যাটেল বলেন, “অনেকেই ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নিয়ে কথা বলছেন। এটাও বলছেন যে, ট্রাম্প সত্যিই এই সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য অনেক চেষ্টা করেছেন।”
“আমার মনে হয় না ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন সময়ে কমালা হ্যারিস কখনও ভারত সফর করেছেন।”
পেশাগত দিক থেকে স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত প্রীতি পাণ্ডিয়া প্যাটেল।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গেও ভারতের ভালো সম্পর্ক। চীনকে মোকাবিলা করার কথা মাথায় রেখে ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করেছে মার্কিন প্রশাসন।
সেই প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে ২০২৩ সালের জুন মাসে স্টেট ডিনারে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মোদীকে আমন্ত্রণ জানানোর মতো পদক্ষেপও রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে মি. মোদীর মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেন কমালা হ্যারিস।
ভারতীয়-আমেরিকানদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখার চেষ্টা করতে দেখা গিয়েছে মিজ হ্যারিসকে। তিনি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন, ভারতীয়-আমেরিকান ব্যবসায়ী, নির্বাহীদের সাথে বৈঠকও করেছেন।
ভোটের প্রচারের সময় তাদের মাতৃভাষা ব্যবহার করে ভারতীয়-আমেরিকান ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করতে দেখা গিয়েছে তাকে। বার্ষিক দীপাবলি পার্টিতে অসংখ্য ভারতীয়-আমেরিকানদের জন্য তার সরকারি বাসভবনের দরজাও খুলেছেন।
তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পও সেদিক থেকে পিছিয়ে নেই। ‘হিন্দু কোয়ালিশন অফ দ্য রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটি’র চেয়ারম্যান শলভ শল্লি কুমারের জানিয়েছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনি শিবির দরজায়-দরজায় গিয়ে প্রচারের মাধ্যমে ভারতীয়-আমেরিকান ভোটারদের কাছে পৌঁছাতে চেয়েছে। ভারতীয় আউটলেটের সমর্থনও পেতে চেয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অপরাধ, শিক্ষা এবং অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগের মতো বিষয়গুলো তুলে ধরে দক্ষিণ এশীয় সম্প্রদায়ের মানুষকে রিপাবলিকানদের প্রতি আকৃষ্ট করতে চেয়েছে মি. ট্রাম্পের প্রচার শিবির। এই বিষয়গুলোকে বেশ এশিয়ান-আমেরিকান গুরুত্বের সঙ্গেই দেখেন।
প্রীতি পাণ্ডিয়া-প্যাটেল জানিয়েছেন, তার কাছে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগজনক বিষয়ের মধ্যে প্রথম হলো অবৈধ অভিবাসন। তিনি মনে করেন গত চার বছরে এই সমস্যার সমাধানের জন্যভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যারিসের একটা উপায় খুঁজে বের করা উচিৎ ছিল। মি. ট্রাম্প ও তার শিবির অভিবাসন ইস্যুতে বারবার হ্যারিস ও বাইডেন প্রশাসনের সমালোচনা করেছেন।
প্রীতি পাণ্ডিয়া-প্যাটেল বলেছেন, “আমি এখানে এসেছিলাম ১৯৭০-এর দশকে। আমার বাবা বৈধভাবে এই দেশে এসেছিলেন এবং বর্তমানে তিনি যে জায়গায় আছেন সেখানে পৌঁছানোর জন্য তিনি সত্যিই কঠোর পরিশ্রম করেছেন।”
“আমার শুধু মনে হয়, ৬০ ও ৭০ এর দশকে যারা বৈধভাবে এসেছেন এবং টিকে থাকার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, তাদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে বা পুরস্কৃত করা হচ্ছে না।”
কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার ভোট পাওয়া কোনও প্রার্থীর পক্ষেই তেমন সহজ নয়।
‘হিন্দু কোয়ালিশন অফ দ্য রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটি’-র রবীশ কুমার বলেন, “ট্রাম্পের প্রচার শিবির ব্যাটলগ্রাউন্ড স্টেটগুলোতে ভারতীয় ভোটকে পুঁজি হিসাবে ব্যবহার করতে পারেনি, যেমনটা চার বছর আগে তারা করতে পেরেছিল।
চলতি নির্বাচনি চক্রে ডেমোক্র্যাটরা এই সম্প্রদায়ের কাছে পৌঁছানোর জন্য আরও ভালো কাজ করেছে।
মি. রামকৃষ্ণণন মনে করেন, দক্ষিণ এশীয়, বিশেত ভারতীয়-আমেরিকানদের মধ্যে, বিশেষ করে জর্জিয়া ও নর্থ ক্যারোলাইনার মতো গুরুত্বপূর্ণ সুইং স্টেটে কমালা হ্যারিসের জনপ্রিয়তা নভেম্বরের নির্বাচনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে প্রমাণিত হতে পারে।
বিবিসিকে তিনি বলেন, “দক্ষিণ এশীয় মানুষ হ্যারিসের পক্ষে ঝুঁকছে এবং সেই ভোটারদের সংখ্যা কিন্তু বেশি। তাই এটা সহজেই অনুমান করা যেতে পারে যে ভোটে লড়াই কেমন হবে।”