চট্টগ্রাম নগরীর অলংকার থেকে র্যাব কতৃক পরিবহন শ্রমিক নামধারী ৫ পাঁচ জন চাাঁদাবাজকে গ্রেফতার করায় গণপরিবহন মালিক-শ্রমিকদের অঘোষিত ধর্মঘট চলছে। পূর্ব ঘোষণা ছাড়া ধর্মঘট পালন করায় দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে সকালে অফিসগামী চাকুরিজীবীদের চরম বে-কায়দায় পড়তে হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ৭ অক্টোবর, সকাল থেকে নগরীর পতেঙ্গা, অলংকার, কাজির দেউরি, নতুন ব্রিজ, ইপিজেড, আগ্রাবাদ, দেওয়ানহাট, মুরাদপুর, আতুরার ডিপো, অক্সিজেন মোড়সহ বিভিন্ন মোড়ে শত শত মানুষকে গাড়ির জন্য অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে। অনেকে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে রিকশা, টেম্পো ও সিএনজি অটোরিকশায় গন্তব্যে পৌছেছেন।
পরিবহণ নেতাদের দাবি, গতকাল (৬ অক্টোবর) বুধবার অলংকার থেকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৭) ৫ পরিবহন শ্রমিককে গ্রেফতারের প্রতিবাদে কিছু মালিক-শ্রমিক ধর্মঘট পালন করছে। এটি পূর্ব ঘোষিত কোনো ধর্মঘট নয়।
এ বিষয়ে তাদের সাংগঠনিক কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না। সাধারণ যাত্রী ও প্রশাসন বলছেন, পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের এমন আচরণ একেবারেই ঠিক হয়নি। পূর্ব ঘোষণা ছাড়া ধর্মঘট পালন জনদুর্ভোগ ছাড়া আর কিছুই নয়।
ভুক্তোভোগী সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী মো কাউচার জানান, পতেঙ্গা কাটগড় থেকে আগ্রাবাদ এলাকায় আসবেন তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে। কিন্তু কোনও গাড়ি না পেয়ে তিনি দাঁড়িয়েছিলেন প্রায় এক ঘন্টা।
গার্মেন্টসকর্মী নুরুজ্জাহান জানান, সকাল ৮টার পূর্বেই সিইপিজেড তার কর্মস্থলে পৌছতে হবে। নগরীর আগ্রাবাদে ১ ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো গাড়ি তিনি পাননি। তাই বাধ্য হয়ে কয়েকজন মিলে একটি সিএনজি অটোরিকশায় করে গন্তব্যে রাওনা করেন।
এদিকে পরিবহন ধর্মঘটের কারণে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েছেন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীও।
তাদের অভিযোগ, ‘পরিবহন নেতাদের এমন আচরণে আমরা ক্ষুব্ধ। কোনও ঘোষণা না দিয়ে এভাবে বাস চলাচল বন্ধ রাখা উচিত হয়নি। তিন-চারগুন ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে।’
গতকাল বুধবার (৬ অক্টোবর) দুপর সাড়ে ১২টায় গাড়ি থেকে চাঁদা আদায়ের সময় অলংকার থেকে মো. আজাদ (৩৪), মো. অহিদ (৩৮), মো. আরিফ হোসেন (৩০), নারায়ন দে (৫১) ও মো. সিদ্দিক হোসেন (৪৫) নামের ৫ পরিবহন শ্রমিককে গ্রেফতার করে র্যাব।
এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিচ্ছিন্নভাবে ধর্মঘট পালন করেছে গণপরিবহণ মালিক-শ্রমিকরা। কিন্তু পরিবহন মালিকরা বলছেন, প্রশাসনের নির্যাতনের কারণে তারা গাড়ি চালাতে পারছেন না। এজন্য বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রæপের মহাসচিব গোলাম রসুল বাবুল বলেন, ‘এটি একটি বিচ্ছিন্ন ধর্মঘট। ৫ জন পরিবহন শ্রমিককে র্যাব গ্রেফতার করায় কিছু মালিক-শ্রমিক ধর্মঘট পালন করছে। ওই শ্রমিকরা বাস থেকে ৫/১০ টাকা নিতেন। তবে সাংগঠনিক কোনো সিদ্ধান্তে এ ধর্মঘট নয়। কিছু মালিক-শ্রমিক নিজেদের ইচ্ছায় ধর্মঘট পালন করছেন।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক অলি আহম্মদ বলেন, ‘অলংকার মোড় থেকে একজন লাইনম্যানসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। তাই পরিবহন মালিকরা বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন।
সিএমপির ট্রাফিক- বন্দর বিভাগের উপকমিশনার শাকিলা সোলতানা বলেন, পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। পূর্ব ঘোষণা ছাড়া এমন ধর্মঘট একেবারেই কাম্য নয়। তবে কয়েকজন শ্রমিককে র্যাব গ্রেফতার করেছে শুনেছি।