মিয়ানমারের রাখাইনে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মির মধ্যে চলা সংঘাতের জেরে কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌরুটে ৮ দিন ধরে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে করে বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত সেন্ট মার্টিন দ্বীপের ১০ হাজার বাসিন্দা খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সংকটের পাশাপাশি মূলভুখণ্ডে যাতায়াত করতে পারছে না।
দ্বীপের বাসিন্দাদের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রাখতে আজ শুক্রবার কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে ‘এমভি বারো আউলিয়া’ নামে একটি জাহাজে করে খাদ্য ও নিত্যপণ্য পাঠানো হয়েছে। বেলা আড়াইটার দিকে ২০০ টন মালামাল নিয়ে জাহাজটি সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশ্যে ঘাট ছেড়েছে।
সকাল ১০টা থেকে বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে ‘এমভি বারো আউলিয়া’ নামের জাহাজটিতে চাল, ডাল, পেঁয়াজ, রসুন ও তেলসহ নানা ধরনের ভোগ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য তোলা হয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. ইয়ামিন হোসেন জানান, দ্বীপের জনপ্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সমন্বয় করে মালামাল নিয়ে জাহাজটি পাঠানো হচ্ছে। এছাড়া কক্সবাজারে কাজে এসে আটকে পড়া সেন্ট মার্টিনের ১৫০ জনের মতো বাসিন্দা এই জাহাজে করে ফিরে গেছে। এর পাশাপাশি দ্বীপে কর্মরত বিজিবি এবং কোস্ট গার্ডের সদস্যরাও তাদের প্রয়োজনীয় খাদ্য পণ্য নিয়ে এই জাহাজে করে কর্মস্থলে গেছে।
তিনি জানান, এই জাহাজে ব্যবসায়ীদের নিজস্ব মালামালের পাশাপাশি প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের জন্য বরাদ্দ করা ভিজিএফ চাল দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য ঈদের উপহার এবং পাঁচটি কোরবানির পশু পাঠানো হয়েছে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, এক সপ্তাহ ধরে নাফ নদীর নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় মিয়ানমার সীমান্ত থেকে বাংলাদেশি ট্রলার ও স্পিডবোট লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হচ্ছে। এ কারণে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌরুটে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে দ্বীপে খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে।
এর আগে ৭ দিন পর বিজিবি ও কোস্টগার্ডের নিরাপত্তায় গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সেন্টমার্টিন থেকে তিনটি ট্রলারে করে দুই শতাধিক হোটেল শ্রমিক ও সাধারণ মানুষ টেকনাফ পৌঁছান। এ সময় টেকনাফ থেকে বিকল্প সাগরপথে চারটি ট্রলারে করে তিন শতাধিক লোক সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশ্যে রওনা হন।
মিয়ানমারের রাখাইনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দেশটির সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মির মধ্যে গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে যুদ্ধ চলছে। যুদ্ধের আঁচ লাগছে এপারের বাংলাদেশের সীমান্তের গ্রামগুলোতে। বাংলাদেশি ট্রলারগুলো লক্ষ্য করে সীমান্তের ওপর থেকে কারা গুলি করছে তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।
চকো/জে