কক্সবাজারের তিন উপজেলার ২১ ইউপি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ আজ বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর)। ইতোমধ্যে নির্বাচনী সামগ্রী নিয়ে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে গেছেন। তবে এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সর্বত্র উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকলেও মাত্র দুটি ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকায় গোলাগুলী ও খুনোখুনির মতো সহিংসতার ঘটনা ঘটায় এখানে ভোটারদের মাঝে তৈরি হয়েছে শংকা।
তবে এসব শংকা মাথায় রেখেই ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠানের দিন কয়েকটি কেন্দ্রে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ। তিনি বলেন, সব শংকা মাথায় রেখেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। তাই ভোটারদের নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে যেতে হবে।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত শুক্রবার শহরের পাশ^বর্তী ঝিলংজা ইউনিয়নের লিংকরোডে দূর্বৃত্তের গুলীতে গুরুতর আহত হয়ে ২ দিন পর প্রাণ হারিয়েছেন জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম সিকদার।
একই সময় তার ছোটভাই মেম্বারপ্রার্থী ও বর্তমান মেম্বার ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক কুদরতউল্লাহ সিকদার গুলীবিদ্ধ হন। তিনি বর্তমানে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সোমবার জহিরুল ইসলাম সিকদারকে জানাযা শেষে দাফন করার পর ওইদিন রাতে পাশ^বর্তী পিএমখালী ইউনিয়নে গুলীবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন একজন সদস্য প্রার্থী। তিনিও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এই দুই ইউনিয়নের মাত্র কয়েকটি এলাকা ছাড়া অন্য কোথাও নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোন সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি। গত ২৮ অক্টোবর প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর প্রার্থীরা উৎসবমুখর প্রচারণায় নামেন। এতদিন সবকিছু শান্তিপূর্ণভাবে চললেও ভোটগ্রহণের মাত্র কয়েকদিন আগে দুটি এলাকায় সংঘটিত হয় সহিংসতা, যেখানে মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারান একজন এবং গুলীবিদ্ধ হন কয়েকজন।
জেলা নির্বাচন অফিসার এসএম শাহাদাত হোসেন জানান- আজ বৃহস্পতিবার ( ১১ নভেম্বর) দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে কক্সবাজার জেলার তিন উপজেলার ২১ টি ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ করা হবে। যেখানে চেয়ারম্যান পদে ১২৪ জন, সাধারণ সদস্য পদে ৮৮১ জন এবং সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ২৩২ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করছেন। গত মাসের শুরুতে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর ১৭ অক্টোবর প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমাদান, ২১ অক্টোবর বাছাই এবং ২৮ অক্টোবর বাছাইকৃত প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ শেষে জোর প্রচারণায় নেমে পড়েন প্রার্থী ও তাদের কর্মী সমর্থকেরা। গত মঙ্গলবার প্রচারণা শেষ হয়। গতকাল বুধবার ব্যালটসহ নির্বাচনী সামগ্রী নিয়ে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে যান নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
আজ অনুষ্টেয় তিন উপজেলার ২১ ইউপির নির্বাচনে মোট ভোটার রয়েছেন ৪ লাখ ৪ হাজার ৯৫২জন, যারমধ্যে পুরুষ ২১১৩৪৭ জন এবং মহিলা ১ লাখ ৯৩ হাজার ৬০৫ জন। আর কেন্দ্র রয়েছে ২০৩ টি, বুথ ১০৬৭টি।
নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ২১ জন, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন ২০ জন, বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ১৬ জন, জামায়াত সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ৬ জন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী ১০ জন, জাসদ সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ১ জন এবং সাধারণ স্বতন্ত্র প্রার্থী ৫০ জন।
মাঠে থাকা প্রার্থীদের মধ্যে কক্সবাজার সদর উপজেলার ৫ টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন- ঝিলংজা ইউনিয়নে টিপু সুলতান (নৌকা), এম. রাশেদুল করিম (স্বতন্ত্র), মোহাম্মদ মহিউদ্দিন পাটোয়ারী ( ইসলামী আন্দোলন), মোহাম্মদ আবুল কাশেম (স্বতন্ত্র-জামায়াত) মো. রায়হান (স্বতন্ত্র) শফিকুল ইসলাম (স্বতন্ত্র), খুরুশকূল ইউনিয়নে মো. শাহজাহান সিদ্দিকী (নৌকা), মো. আব্দুর রহিম (স্বতন্ত্র-জামায়াত), মো. নুরুল আমিন (স্বতন্ত্র-বিএনপি), পিএমখালী ইউনিয়নে সিরাজুল মোস্তফা (নৌকা), মোস্তাক আহমদ (স্বতন্ত্র-জামায়াত), মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ (ইসলামী আন্দোলন), মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ (স্বতন্ত্র-বিএনপি), মো. শহীদুল্লাহ (স্বতন্ত্র), মো. ছৈয়দ নুর (স্বতন্ত্র), চৌফলদন্ডী ইউনিয়নে মুজিবুর রহমান (নৌকা),জিয়াউল হক (স্বতন্ত্র), মোহাম্মদ নুরুচ্ছবিহ (স্বতন্ত্র-বিএনপি), মোহাম্মদ শাহজাহান ( স্বতন্ত্র-আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী), হাসান মুরাদ আনাচ (স্বতন্ত্র-আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী), ভারুয়াখালী ইউনিয়নে কামাল উদ্দিন (নৌকা), আমিনুল হক (স্বতন্ত্র-বিএনপি), মুস্তাফিজুর রহমান (স্বতন্ত্র-জামায়াত), মোহাম্মদ পারভেজ (স্বতন্ত্র), রবিউল হাসান (স্বতন্ত্র)।
উখিয়া উপজেলার ৫ টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন- রতœাপালং ইউনিয়নে নুরুল হুদা (নৌকা), নুরুল কবির চৌধুরী (স্বতন্ত্র-জামায়াত), মাহফুজ উদ্দিন বাবু (স্বতন্ত্র), মোরশেদ আলম (ইসলামী আন্দোলন), মো. আব্বাস উদ্দিন (স্বতন্ত্র-বিএনপি), রাজাপালং ইউনিয়নে জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী (নৌকা), মোহাম্মদ শাহজাহান (স্বতন্ত্র), সাদমান জামী চৌধুরী (স্বতন্ত্র-বিএনপি), হোছাইন আলী (ইসলামী আন্দোলন), হলদিয়া পালং ইউনিয়নে মো. শাহ আলম (নৌকা), আমিনুল হক আমিন (স্বতন্ত্র-আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী), এম. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর (ইসলামী আন্দোলন), এস. এম. ইমরুল কায়েস চৌধুরী (স্বতন্ত্র-আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী), মুনীর আহমদ (স্বতন্ত্র), গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী (স্বতন্ত্র-আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী), মোহাম্মদ ইমরান (স্বতন্ত্র), মোহাম্মদ সোহেল বেলাল (স্বতন্ত্র), মো. ইকবাল বাহার চৌধুরী (স্বতন্ত্র), জালিয়াপালং ইউনিয়নে এস. এম. ছৈয়দ আলম (নৌকা), আনোয়ার হোসাইন (স্বতন্ত্র), সৈয়দ মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন (স্বতন্ত্র), জহুর আহমদ চৌধুরী (স্বতন্ত্র), নুরুল আমিন চৌধুরী (স্বতন্ত্র-বিএনপি), মো. মনিরুল আলম (স্বতন্ত্র), নুরুল আমিন (স্বতন্ত্র),মো. শফিকুল হুদা (স্বতন্ত্র), রফিকুল হুদা (স্বতন্ত্র), শাহ আমিন চৌধুরী (স্বতন্ত্র), পালংখালী ইউনিয়নে আবুল মঞ্জুর (নৌকা), আলী আহমদ ( স্বতন্ত্র-আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী), এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী (স্বতন্ত্র-বিএনপি), মোহাম্মদ আব্দুল মালেক (স্বতন্ত্র), রাশেদুল আমিন (ইসলামী আন্দোলন), শাহাদাত হোসেন জুয়েল (স্বতন্ত্র-আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী)।
রামু উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন- চাকমারকূল ইউনিয়নে, নুরুল ইসলাম সিকদার (নৌকা), . নুরুল আলম (স্বতন্ত্র-আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী), সাইফুল ইসলাম (স্বতন্ত্র), আব্দুর রাজ্জাক (স্বতন্ত্র), মো. আব্দুল মজিদ (স্বতন্ত্র), ফজলুল ইসলাম (স্বতন্ত্র), মুহাম্মদ আলমগীর (স্বতন্ত্র), আব্দুর রহিম (স্বতন্ত্র)। ফতেখাঁরকূল ইউনিয়নে, নুরুল হক (নৌকা), ফরিদুল আলম (স্বতন্ত্র-আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী), সিরাজুল ইসলাম ভূট্টো (স্বতন্ত্র-আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী)।
গর্জনিয়া ইউনিয়নে
মুজিবুর রহমান বাবুল (নৌকা) . ছৈয়দ নজরুল ইসলাম (স্বতন্ত্র-আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী), গোলাম মওলা চৌধুরী (স্বতন্ত্র-বিএনপি), আজিজ মওলা (স্বতন্ত্র), গোলাম মওলা (স্বতন্ত্র), মো. শফিউল আলম (স্বতন্ত্র), মুহাম্মদ মুহিবুল্লাহ (স্বতন্ত্র) ঈদগড় ইউনিয়নে হাজী নুরুল আলম (নৌকা), ফিরোজ আহমদ চৌধুরী ভূট্টো (স্বতন্ত্র-আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী), নুরুল আজিম (স্বতন্ত্র-বিএনপি), ওসমান সরওয়ার (ইসলামী আন্দোলন)। জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নে কামাল শামশু উদ্দিন আহমেদ প্রিন্স (নৌকা), আবছার কামাল সিকদার (স্বতন্ত্র-আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী), এস. এম. নুরুচ্ছফা ( স্বতন্ত্র-বিএনপি), আনসার আলম (স্বতন্ত্র-আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী), গোলাম কবির (স্বতন্ত্র), রাশেদুল ইসলাম (স্বতন্ত্র)।
কচ্ছপিয়া ইউনিয়নঃ নুরুল আমিন (নৌকা), জয়নাল আবেদীন (স্বতন্ত্র-আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী), আবু মো. ইসমাঈল নোমান (স্বতন্ত্র), মুহাম্মদ শফিকুল আকবর হেলাল (স্বতন্ত্র-বিএনপি), মো. তৈয়ব উল্লাহ (স্বতন্ত্র-জামায়াত), মো. আবু তালেব (স্বতন্ত্র)। খুনিয়াপালং ইউনিয়নে আব্দুল মাবুদ (নৌকা), আব্দুল হক (স্বতন্ত্র-আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী), মো. হাবিবুর রহমান (স্বতন্ত্র), কবির আহমদ (ইসলামী আন্দোলন) হোছাইন আহমদ (স্বতন্ত্র), দেলোয়ার হোসেন (স্বতন্ত্র), রহিম উল্লাহ (স্বতন্ত্র), কামাল উদ্দিন (স্বতন্ত্র)।
কাউয়ারখোপ ইউনিয়নে ওসমান সরওয়ার মামুন (নৌকা), মোস্তাক আহমদ (স্বতন্ত্র-আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী), মোজাফ্ফর আহমদ (স্বতন্ত্র-জাসদ), নুরুল হক (স্বতন্ত্র), শামশুল আলম (স্বতন্ত্র-আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী), সাইমুন ইসলাম শাহিন (স্বতন্ত্র-বিএনপি), জহির উদ্দিন(স্বতন্ত্র)। রশিদনগর ইউনিয়নে মো. মোয়াজ্জেম মোর্শেদ (নৌকা), এম. ডি শাহ আলম (স্বতন্ত্র-আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী), মো. হান্নান সিদ্দিকী (স্বতন্ত্র-বিদ্রোহী)।
রাজারকূল ইউনিয়ন সরওয়ার কামাল সোহেল (নৌকা), মুফিজুর রহমান (স্বতন্ত্র-বিএনপি), তাজুল ইসলাম (ইসলামী আন্দোলন), শাহেদ উল্লাহ আনসারি (স্বতন্ত্র)। দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নে খোদেসতা বেগম রীনা (নৌকা), মো. ইউনুস ভূট্টো (স্বতন্ত্র-আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী), ইয়াছিন মনির সোহান (স্বতন্ত্র), মোহাম্মদ এয়াকুব (স্বতন্ত্র), মুহাম্মদ ওমর ফারুক (স্বতন্ত্র), মুহাম্মদ শফিউল্লাহ (ইসলামী আন্দোলন), মো. সাইফুল ইসলাম (স্বতন্ত্র), সাদ আল আলম চৌধুরী (স্বতন্ত্র), মো. সাইফুল আলম (স্বতন্ত্র-বিএনপি)।