পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়ন এর ২নং ওয়ার্ডে অবস্থিত মেউন্দা মুসলিম পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়নে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তার দূর্গম পথ।
যোগাযোগ এর কারণে অনেক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে পারে না।পোলাও পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে দেড়-দুই কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এ বিদ্যালয়টি ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।
পোলাও পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে রয়েছে খাল।নাই খালের উপর কোনো ব্রীজ/সেতু।
ভাঙা ও উঁচু পাহাড়ের ভিতর দিয়ে বয়ে যাওয়া রাস্তাটি যেন মৃত্যুকূপ।মেউন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশাপাশি ঐ পাশ থেকে আসা সোনাই ছড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে আসা শিক্ষার্থীদের জন্যও এটা বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সবচেয়ে ভয়ানক হয়ে উঠে বর্ষাকালে যখন অল্প বৃষ্টির পানিতে পিচ্ছিল হয়ে যায় যোগাযোগ এর একমাত্র পথটি।নানান সময় দূর্ঘটনায় আহত হয়ে লাখ টাকার চিকিৎসা করে সুস্থ হয়েছে এমন ঘটনাও আছে বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে কয়েকজন কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বলে,আমরা পড়াশোনা করে মানুষের মতো মানুষ হতে চাই কিন্তু আমরা রাস্তার কারণে ও মাঝখানে খাল থাকায় বর্ষাকালে বিদ্যালয়ে আসতে পারিনা।
আমরা জোর করে আসতে চাইলে বিপদ হওয়ার ভয়ে আমাদের মা-বাবারা আসতে দেয় না।আমাদের বিদ্যালয়ে নাই কোনো নলকূপ। তাই বিশুদ্ধ পানি থেকেও আমরা বঞ্চিত।
এ বিষয়ে আহত হওয়া এক সহকারি (মহিলা) শিক্ষক বলেন,আমি গত রমজানের আগের দিন পরে গিয়ে হাত ভেঙ্গে ফেলি।যা সুস্থ হতে আমার আনুমানিক ১,৫০,০০০টাকা খরচ হয়।তাছাড়া আমার এক সহকর্মী আহত হয়েছিল, সে সুস্থ হওয়ার পর এখান থেকে বদলি হয়ে চলে যায়। শিক্ষার্থীরাও আহত হওয়ার রেকর্ড অনেক।
প্রধান শিক্ষিক বলেন,আমি ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠা হওয়া বিদ্যালয়ে ১৯৯৩ সালে যোগদান করি।প্রথমে বিদ্যালয়টি আজিজনগর ইউনিয়ন এর আওতাধীন থাকলেও এখন ফাইতং ইউনিয়ন এর ২নং ওয়ার্ডে অবস্থিত।
তখন থেকে এখানে কোনো টিউবওয়েল পায়নি।যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই খারাপ।অনেক শিক্ষক দূর্গম পথের কারণে বদলি হয়ে চলে যায়।শিক্ষার্থীরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে পারে না।
বর্ষাকালে উপস্থিতর সংখ্যা খুবই সূচনীয়। তাই সড়কটি হওয়া খুবই জরুরি। আর বিশুদ্ধ পানির সংকট নিরসনে একটি টিউবওয়েল আবশ্যক।
এ বিষয়ে ফাইতং ইউনিয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যান মোঃ ওমর ফারুক বলেন,সামনে নির্বাচন তাই এখন বাজেট নাই।তবে কর্মসূচির মানুষ দিয়ে করে দেওয়া হয়েছে। এমনটা বললেও সরেজমিনে তা অদৃশ্য।
লামা উপজেলার নির্বাহী অফিসার মোস্তফা জাবেদ কায়সার বলেন, আমি চেয়ারম্যান মহোদয় এর সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব দেখি কি করা যায়,এখন না হলেও ভবিষ্যতে যেন এ সড়কটির কাজ হয় তা চেষ্টা করব। তবে দ্রুত এ সড়কের ব্রিজ ও সড়ক নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করব।
লামা উপজেলা শিক্ষা অফিসার বলেন,এরকম যাতায়াতের সমস্যার কারণে আমরা আনুমানিক লামায় ২০ টা বিদ্যালয়ে যেতেও পারিনা।আমরা বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করেছি দেখি হয় কি না, এ ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রতিনিধিদের এগিয়ে আসাও উচিত বলে জানান এ কর্মকর্তা।