চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাট বাজারটি চলতি ১৪৩১ বাংলা সনে সর্বোচ্চ ১১ লাখ টাকায় উপজেলা প্রশাসন থেকে ইজারা পেয়েছেন নুরুল আলম নামের এক ব্যক্তি। অবশ্য এই একই ব্যক্তি গত ১৪৩০ বাংলা সনেও বাজারটি ১৯ লাখ টাকার সর্বোচ্চ ডাককারী হিসেবে ইজারা নিয়ে যথারীতি টোল আদায়ের মহোৎসব শেষ করেছেন।
অভিযোগ উঠেছে, নুরুল আলমের নামে চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন থেকে মালুমঘাট বাজারটি ইজারা নেওয়া হলেও তাঁর সঙ্গে সিন্ডিকেট চক্রে রয়েছেন আরও একাধিক সদস্য। স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিগত বেশ কয়েকবছর ধরে নুরুল আলম গং বাজারটি বেশি টাকা রাজস্ব দিয়ে ইজারা নিচ্ছেন মুলত বাজার লাগোয়া বনবিভাগের জায়গা দখলের জন্য। সেখানে ইতোমধ্যে অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা তৈরি করে নিয়েছেন সিন্ডিকেট চক্রের লোকজন।
স্থানীয় লোকজন ও বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে মালুমঘাট বাজার ঘুরে পাওয়া গেছে, টোল (হাছিল) আদায়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য। সরকারিভাবে মালুমঘাট বাজারটি সপ্তাহে দুইদিন (রবিবার ও বুধবার) বসানোর নিয়ম থাকলেও ইজারাদার নুরুল আলম সিন্ডিকেট সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে সপ্তাহে সাতদিন টোল আদায়ের মহোৎসবে মেতে উঠেছে।
মালুমঘাট বাজারের সবজি দোকানী কামাল উদ্দিন, মুরগী দোকানী মাহাবুব আলম, মুদির দোকানী বেলাল উদ্দিন, সবজি দোকানী আবুল কালাম, শুটকি মাছের দোকানী শফিউল আলম, পানের দোকানী বিমল দে, মুরগী দোকানী মুরগী দোকানী ফোরকান, পানের দোকানী শামসু উদ্দিন, মুদির দোকানী আবু তাহের ও সবজি দোকানী আবদুল খালেকসহ বেশিরভাগ ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, আগে মালুমঘাট বাজারে সপ্তাহে দুইদিন রবিবার ও বুধবার টোল (হাছিল) আদায় করতেন ইজারাদার। কিন্তু বর্তমান ইজারাদার নুরুল আলমের লোকজন সপ্তাহে সাতদিন আমাদের কাছ থেকে টোল আদায় করছেন। সরকারিভাবে টোল আদায়ের তালিকা থাকলেও তা অমান্য করে দিগুণ থেকে তিনগুণ বেশি টোল আদায় করা হচ্ছে।
বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ীদের দাবি, বর্তমান ইজারাদার নুরুল আলম গং গত দুইবছর ধরে সপ্তাহে দুইদিনের বদলে সাতদিনই জোরপূর্বক টোল আদায় করে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বাজারের শতাধিক সাধারণ ব্যবসায়ী অঘোষিত ভাবে ইজারাদার সিন্ডিকেট চক্রের কাছে জিন্মি হয়ে পড়েছে। কেউ তাদের চাহিদা মতো টোল (হাছিল) দিতে না চাইলে তাঁকে বাজার থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি ধমকি দেয়। এই অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা সপ্তাহে সাতদিন টোল আদায় বন্ধে এব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) ও কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মালুমঘাট বাজার ইজারাদার নুরুল আলম বলেন, সপ্তাহে দুইদিন রবিবার ও বুধবার বাজারটি বসানোর নিয়ম রয়েছে এটা সত্য। কিন্তু মালুমঘাট বাজার সাতদিন চালু থাকায় আমরা সাতদিনই হাছিল নিচ্ছি, এব্যাপারে জেলা প্রশাসনের অনুমতিপত্র রয়েছে।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.ফখরুল ইসলাম বলেন, মালুমঘাট বাজারটি সপ্তাহে দুইদিন বসাতে পারবে এটা ঠিক। তবে যদি প্রতিদিন একভ বাজারে কাচামাল বেচাকেনা চলে সেইক্ষেত্রে ইজারাদার সেসব পন্য থেকে টোল আদায় করতে পারবে। এব্যাপারে আইনগত কোন বিপত্তি নেই।
চকো/জে