কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার বালুখালী ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে ৭ রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে।
এ ঘটনায় আহত হয়েছে ৮ থেকে ৯ জন। গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে এই সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনা ঘটে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ৮ আর্মাড পুলিশ ব্যাটালিয়ন এপিবিএন এর অধিনায়ক পুলিশ সুপার শিহাব কায়সার জানান বৃহস্পতিবার রাতে উখিয়া বালুখালী ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সংঘর্ষে দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ঘটনাস্হলে ৪ রোহিঙ্গা হাসপাতালে ৩ জন নিহত হয়েছে। এই ঘটনায় আহত হয়েছে ৮/৯ জন রোহিঙ্গা।
ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে ৮ এপিবিএন এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিডিয়া মোহাম্মদ কামরান হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার মধ্য রাতের পর বালুখালী ১৮ নম্বর ক্যাম্পের এইচ-৫২ ব্লকে অবস্থিত ‘দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামিয়াহ’ মাদ্রাসায় রোহিঙ্গা দুষ্কৃতিকারীরা হামলা চালায়।
উক্ত হামলায় মাদ্রাসায় অবস্থানরত ৪ জন রোহিঙ্গা সদস্য মারা যায়।
ঘটনা জানতে পেরে ময়নারঘোনা এপিবিএন পুলিশ ক্যাম্প-১২ এর পুলিশ সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধারপূর্বক চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
পুলিশ হামলাকারীদের একজনকে একটি দেশীয় লোডেড ওয়ান শুটারগান, ৬ রাউন্ড গুলি ও একটি ছুরি সহ একজনকে হাতেনাতে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তার নাম মুজিব বলে জানা গেছে।
উখিয়া থানা পুলিশ এসে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে এবং লাশ মর্গে প্রেরণের ব্যবস্থা করা হয় বলে জানান তিনি।
ঘটনায় নিহতরা হলো মোঃ ইদ্রীস (৩২), ক্যাম্প-১২, ব্লক-জে৫ তিনি হাফেজ এবং মাদ্রাসার শিক্ষক;
ইব্রাহীম হোসেন (২৪),পিতা: মৃত মুফতি হাবিবুল্লাহ, ক্যাম্প-৯,ব্লক-২৯;
আজিজুল হক-ছাত্র(২২) পিতা- নূরুল ইসলাম ক্যাম্প-১৮, ব্লক-এইস৫২;
ভলান্টিয়ার মোঃ আমীন (৩২) পিতা-আবুল হোসেন ক্যাম্প ১৮, ব্লক-এইস ৫২।
হাসপাতালে মারা যাওয়া আরও ৩ রোহিঙ্গা হচ্ছে:
নুর আলম ওরফে হালিম (৪৫) পিতা: মোহাম্মদ নবী, ক্যাম্প-১৮, ব্লক-এফ-২২;
মাদ্রাসার শিক্ষক হামিদুল্লাহ (৫৫), পিতা: রহিমুল্লাহ, ক্যাম্প-২৪;
নুর কায়সার (১৫), পিতা: নুর মোহাম্মদ, ক্যাম্প-১৮, ব্লক- এইস ৫২।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরো জানান, নিহতরা সকলেই ঐ মাদ্রাসার শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী। তারা গুলিবিদ্ধ এবং ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত হয়েছে।
তিনি জানান ঘটনার পর পরই এপিবিএন পুলিশ এবং জেলা পুলিশ বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিহতদের উদ্ধার এবং অস্ত্রধারীদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করেছে।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়া লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর শীর্ষ নেতা মুহিব্বুল্লাহ।
এই ঘটনার পর থেকেই পুরো রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এপিবিএন পুলিশ এবং জেলা পুলিশ সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। এই অভিযানে এ পর্যন্ত অর্ধশত রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী আটক হয়েছে।