মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ছিলো একটি শোষণমুক্ত, বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু মনে হচ্ছে, কোন এক অদৃশ্য কারণে ধীরে ধীরে আমরা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ হতে দূরে সরে যাচ্ছি (বা গিয়েছি)। প্রশ্ন হলো, ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন দেশে কার ভুলের কারণে বা কারপাপে আজ সাম্প্রদায়িকতা শব্দ শোনা যাচ্ছে! সাম্প্রদায়িকতা নামক এই বিষবাষ্প যখন মাথাচাড়া দেবে,তখন তো এই সমাজে, এই দেশে- হানাহানির রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে। প্রসংগক্রমে সাম্প্রদায়িকতা বিষয়টি সম্পর্কে সামান্য আলোচনা করা যেতে পারে।
সমাজ বিজ্ঞানীদের মতে “সাম্প্রদায়িকতা বা Sectarianism হচ্ছে- সম্প্রদায়ভিত্তিক চিন্তাভাবনা ও কর্মকাণ্ড। আমি বা আমরা যে সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত -সেটি বিশ্বে সবচেয়ে ‘সেরা’ এবং অন্য সব সম্প্রদায় ‘নিকৃষ্ট” –এ ধারণায় বিশ্বাস স্থাপন এবং এ বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে সব কার্যপদ্ধতি পরিচালনা করাই সাম্প্রদায়িকতার বহিঃপ্রকাশ।
সাম্প্রদায়িকতাকে একধরনের অজ্ঞতা, ‘আদিমতা’, ‘হিংস্রতা’ ও ‘হীনমন্যতা’ বলা যায় । যেহেতু (সাম্প্রদায়িক বিশ্বাসানুযায়ী) অন্যেরা নিকৃষ্ট, সেহেতু তাঁদের অধিকারও ন্যূনতম মনে করা। ফলে অবশেষে তা সন্ত্রাসে রূপান্তরিত হয়। বলা যেতে পারে, সন্ত্রাসের মাধ্যমে অন্যদের উপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করার বা অন্যকে নিশ্চিহ্ন করার অপচেষ্টার চুড়ান্ত রূপই হলো এই ‘সাম্প্রদায়িকতা’। যা এক ধরনের মানসিক ব্যাধিও বটে। সাম্প্রদায়িক মানুষ গুলো- ধর্মান্ধ হয়ে যায় এবং হিংস্র মনোভাবাপন্ন হয়ে তুচ্ছ কারনে ভিন্ন সম্প্রদায়ের উপর ঝাপিয়ে পরে “সাম্প্রদায়িক দাংগা” বাঁধিয়ে সন্ত্রাস সৃষ্টি করে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে এবং মানুষ হত্যা করে। পৃথিবীতে বিভিন্ন দেশে যুগেযুগে সাম্প্রদায়িক দাংগায় লক্ষ লক্ষ মানুষ নিহত হয়েছেন। অথচ আমরা লক্ষ্য করলে বুঝতে পারবো যে, এই সাম্প্রদায়িক দাংগায় ধর্মের কোন উপকারই হয় না। বরং ধর্ম ক্ষতিগ্রস্ত হয়, অপমানিত হয়, ধর্ম ছোট হয়ে যায়।
ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার কারণে আমাদের এই দেশেও ইতোপূর্বে দাঙ্গা হয়েছে। দাঙ্গার পরিণতিতে এক সময়ে অবিভক্ত বঙ্গ দ্বিখণ্ডিত হয়ে গেছে, এক খণ্ড যুক্ত হয়েছে পাকিস্তানের সঙ্গে, অন্য খণ্ড ভারতের সাথে। কিন্তু তারপরও দাঙ্গা থেমেছে কি! দুই দেশের কোনো দেশেই থামেনি। সাম্প্রদায়িকতারও অবসান হয়নি। শেষ পর্যন্ত ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবাদের বন্ধন ছিন্ন করে আমরা প্রতিষ্ঠা করেছি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ। তারপরও সাম্প্রদায়িকতার অবসান ঘটেনি। ভিন্ন সম্প্রদায়ের সম্পত্তি দখল, মসজিদ-মন্দির- প্যাগোটাতে আক্রমন ও ধ্বংস করা, নারী ধর্ষণ, হেটলাভ, শুধুমাত্র গো মাংস খাওয়ার অপরাধেও পিটিয়ে হত্যা- সবকিছুই ঘটেছে এই উপমহাদেশে ।
সাম্প্রদায়িক তথা ধর্মান্ধ মানুষেরা পরস্পর পরস্পরকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজও করে থাকেন। এই সাম্প্রদায়িক। মনোভাবাপন্ন মানুষ- ভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষকে ঘৃণা করে। এই ঘৃণা পারস্পরিক সংঘর্ষেরও জন্ম দেয়। কাজেই সাম্প্রদায়িকতা জিনিসটা যে কেমন জঘন্য, নির্মম, কদর্য ও ক্ষতিকারক- সেটা আমরা দেখেছি এবং শুনেছিও।
অথচ আমরা একটু পেছনে গেলে দেখবো যে, আমাদের দেশে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ- যুগ যুগ ধরে একত্রে বসবাস করে এসেছে। হিন্দু কৃষক ও মুসলমান কৃষকের মধ্যে সংঘর্ষ হয়নি। তাঁরা একে অপরকে উৎখাত করতে চায়নি। হিন্দু জেলে ও মুসলমান জেলে এক সঙ্গে নদীতে মাছ ধরেছে। তাঁতিরা তাঁত বুনেছে। সাধারণ মানুষ একে অপরের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছে। মন্দিরের ঘণ্টা ধ্বনি ও মসজিদের আজান এক সঙ্গে মিশে গেছে। সব ধর্মাবলম্বী মানুষ একই পথ ধরে হেঁটেছে, একই বাজার-হাটে গিয়ে কেনাবেচা করেছে, বাস করেছে পাশাপাশি পাড়ায়-মহল্লায়। একজনের বিপদে আরেকজন দৌড়ে এসেছে। কে হিন্দু, কে মুসলমান, কে বৌদ্ধ তা নিয়ে খোঁজাখুঁজি করেনি, নাক সিঁটকায়নি।
একজনের ধর্মীয় উৎসবে অন্যজন নিমন্ত্রণ পেয়েছে- অংশগ্রহণ করেছে (ধর্মাচারণে অংশগ্রহণ নয়, উৎসবে অংশগ্রহণ করেছে )। ‘মোরা একই পিন্ডের দড়ি, কেউ বলে আল্লাহ-রাসুল, কেউ বলে হরি’- এই শ্লোগান ধ্বনিত হতো সর্বত্র।
এটা প্রমাণিত সত্য যে, সাম্প্রদায়িকতা আসলে ধর্মের কোন ব্যাপার নয়, ধর্মব্যবসায়ীদের ব্যাপার । এই উপমহাদেশে ধর্মব্যবসায়ীরা ব্রিটিশ আমল, পাকিস্তান আমল এবং বর্তমান আমলেও ধর্মকে ব্যবহার করে স্বীয় ফায়দা লুঠার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে অবাধে। ধর্ম ব্যবসায়ীরা সম্প্রদায়িকতাকে জিইয়ে রেখেছে। তাঁরা বিনা বাঁধায় ধর্মের অপব্যাখ্যা করছে সার্বক্ষনিক। সে জন্যই সাম্প্রদায়িকতার অবসান ঘটছে না।
আমি আশ্চর্য হই যে, সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী একজন মানুষ ( হোক সে ইসলাম বা সনাতন ধর্মীয় মতবাদে বিশ্বাসী) কিভাবে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীকে ‘দেশ হতে তাড়িয়ে’ দেয়ার কথা বলতে পারেন! একই ধর্মাবলম্বী ভিন্নমতের মানুষকে কথায় কথায় ‘কাফের’ ফতোয়া দিয়ে থাকে! হলি আর্টিজান হত্যাকান্ডের কথা যখন মনে পড়ে, তখন মনে প্রশ্ন জাগে- এই নির্মমতা কি ধর্ম ! এই হত্যায় সৃষ্টিকর্তা কি খুশি হয়েছিলেন ! মোটেই নয়। মসজিদ- মন্দির-প্যাগোডায় হামলা করার জন্য সৃষ্টিকর্তা বলেননি। এই নির্মমতা তো ধর্ম হতে পারে না। ‘নিরাপরাধ’ মানুষ মারার কথা ধর্মে অনুমোদন নেই। ধর্মের নামে মানুষ খুন তো কোন ধর্মই সমর্থন করে না। বরং ধর্মে আছে, যে নিরাপরাধ মানুষ খুন করলো, সে সমগ্র মানবজাতিকে হত্যা করলো (অপরাধী হলেও তো বিনা বিচারে কাউকে মারা যায় না)। এসবই অন্যায়, অবিচার, উন্মাদনা ।
মধ্যযুগের ক্রুসেডের কথা আমরা ইতিহাসে পাই। যেই ক্রুসেড চলেছে শত বছর ধরে।কিন্তু ফলাফল শূন্য। কিন্তু এখন তো মধ্যযুগ নয়, আধুনিক যুগ। বিজ্ঞানের উৎকর্ষতা আজ সর্বোচ্চ পর্যায়ে। আজ কেন কিছু ধর্মান্ধ মানুষ মধ্যযুগের অন্ধকারে ফিরে যেতে চাচ্ছে! একজন মানুষের কাছে অন্য একজন মানুষের জীবন কি করে এত মূল্যহীন হয়ে যায় !
একথা স্বীকার্য যে, – ধর্মের নামে যখন নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয়, তখন ধর্মাবতার ভীষন কষ্ট পান। তিনি তো খুনোখুনি করার জন্য মানুষ সৃষ্টি করেননি । পরস্পরকে ঘৃণা করা তো মানুষের কাজ নয়। কারণ সব মানুষ তো এক সৃষ্টিকর্তারই সৃষ্টি । ধর্মের নামে যখন সন্ত্রাস হয়, তখন ধর্ম কলংকিত হয়। ধর্মের নামে যারা গুণ্ডামি করে, তাঁরা কখনই ধার্মিক নন, তাঁদের বরং সন্ত্রাসী বলা যায়।
আমরা সবাই আগে মানুষ, তারপর আমাদের ধর্ম পরিচয়। যার যার ধর্ম তাঁর তাঁর নিকট শ্রেষ্ঠ। আমার এক হাতে সূর্য, আর অন্য হাতে চন্দ্র এনে দিলেও আমাকে কেউ ধর্মচ্যুত করতে পারবে না (সে বিবেচনায় আমিও সাম্প্রদায়িক। তবে ধর্মান্ধ নই)। তেমনি অন্যের বেলায়ও তা প্রযোজ্য হওয়ার কথা। তাই ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে তর্ক নেহায়াতই বোকামি। আবার সৃষ্টিকর্তা মানুষ পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন “ধর্মের কাজ তথা সৎ কাজ করার জন্য, মানুষের উপকার করার জন্য”। ধর্মান্ধ হয়ে ধর্মের নামে মানুষ খুন করার জন্য কাউকে পাঠানো হয় নি। দাংগা বাঁধিয়ে ধর্মীয় শ্রেষ্ঠত্ব নির্ধারনের জন্য কারও উপর ওহী বা গায়েবি নির্দেশও জারি হয়নি। তাহলে কেন এই অরাজকতা ! কেন এই সন্ত্রাস! কেন এই খুনোখুনি ! সবই দুরভিসন্ধিমূলক এবং ধর্মীয় অপব্যাখ্যা ও অজ্ঞতা মাত্র।
ধর্ম থাকুক মনের গভীরে, অন্তরে। ধর্মকে ভালবেসে আমরা মানবতাবাদী হবো। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ঘৃনা করলে , অত্যাচার করলে তো নিজের ধর্মকেই ছোট করা হয় । এতে নিজের ধর্মের বদনামি হয়। ধর্মের নামে লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগ, মারামারি, হত্যা কোন মতেই সমর্থনযোগ্য নয়। তাই এর অবসান হওয়া জরুরি।
‘আমার বিশ্বাস শ্রেষ্ঠ হলেও তা পেশিশক্তি নয়, বরং প্রয়োজন হলে যুক্তি দিয়ে অন্যের কাছে প্রচার করতে পারি’ । এরূপ বুদ্ধিদীপ্ত যুক্তিতর্কে অন্যের বিশ্বাস পাল্টেও যেতে পারে, এমনকি আমারটাও পাল্টাতে পারে। যদি কারওটাই না পাল্টায় তবুও ক্ষতি নেই। নিজ নিজ বিশ্বাস নিয়ে পারস্পরিক সহাবস্থানই মানবসভ্যতার মূল কথা। প্রত্যেক ধর্মেই ধর্ম প্রচারের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে, কিন্তু কোথাও সহিংসতার মাধ্যমে এ কাজ করতে বলা হয়নি। নানা ধর্ম ও বিশ্বাসের অস্তিত্ব সব ধর্মেই স্বীকার করা হয়েছে। মৃত্যুর পর- কে স্বর্গে যাবে, আর কে নরকে যাবে -সেটি ভিন্ন প্রশ্ন, যা সৃষ্টিকর্তাই নির্ধারণ করবেন। ধর্ম পালন, সৎ কাজ, পরোপকার- স্বর্গ নিশ্চিত করবে, নাকি ধর্মীয় সন্ত্রাস (!) – স্বর্গ নিশ্চিত করবে-সেটা সৃষ্টিকর্তা জানেন। কিন্তু এ পৃথিবীতে সকলেরই নিজ অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে।
আমরা চাই অসাম্প্রদায়িক ও সভ্য এক বাংলাদেশ। অসাম্প্রদায়িকতার অর্থ ‘সম্প্রদায়হীনতা’ নয় বরং ‘সম্প্রদায় নিরপেক্ষতা’। অনেকে অসাম্প্রদায়িকতার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ‘ধর্মহীনতার’ পক্ষে যুক্তি দিয়ে থাকেন। কতিপয় তথাকথিত প্রগতিশীল অনেক সময় ধর্মকে কটাক্ষ করে থাকে এবং প্রকারান্তরে নিজেকেই সাম্প্রদায়িক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। আমার বিশ্বাস যাই হোক না কেন, তা নিয়ে বিতর্ক করা যেতে পারে, কিন্তু কটাক্ষ করা বা চাপিয়ে দেয়া অবশ্যই অনধিকার চর্চা।
মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা বাংলাদেশে অসাম্প্রদায়িকতার এক স্বর্ণসময় প্রত্যক্ষ করেছি । সকল ধর্মের, সকল বর্ণের, সকল পেশার মানুষ এক জোট হয়ে আন্দোলন করেছে, যুদ্ধ করেছে। তখন ধর্মীয় ভেদাভেদ ছিল না, আবার ধর্মহীনতাও ছিল না। একজন মানুষের প্রতি অন্য মানুষের এমন মমতা ও ভালোবাসা আর কখনো দেখা যায়নি। (আমার বাবাকে দেখেছি মুক্তিযুদ্ধের দুঃসময়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বী উনার বন্ধুর বাড়িতে চাউলের বস্তাসহ অন্যান্য খাবার পৌঁছে দিতে)। দু:খজক সত্য হলো, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আজও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্নের পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা যায়নি। তাই সাম্প্রদায়িকতা তথা ধর্মান্ধতা রাষ্ট্রীয় ভাবে প্রতিহত করা প্রয়োজন। ধর্মীয় সন্ত্রাস বন্ধের জন্য সরকারকে কঠোর হতে হবে। আর এজন্য রাষ্ট্রকে সব দিক হতেই গণতান্ত্রিক হতে হবে ।
ধর্মীয় মতাদর্শের পাশাপাশি রাজনীতিতেও সাম্প্রদায়িক আচরণ লক্ষ্য করি। ‘আমার রাজনৈতিক বিশ্বাস শ্রেষ্ঠ, অন্যের রাজনৈতিক বিশ্বাস নিকৃষ্ট’ – এই বিশ্বাসও একধরনের “রাজনৈতিক সাম্প্রদায়িকতা”। যা গণতন্ত্রের অন্তরায়। একটি নির্ভেজাল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রই সব কিছু সুশৃঙ্খল ভাবে পরিচালনা করতে পারে। তাই রাষ্ট্র কর্তৃক শ্রেণি, ধর্ম, নারী- পুরুষ, জাতিসত্তা নির্বিশেষে সব মানুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করা দরকার। রাষ্ট্র পরিচালনায় ‘একচোখা’ নীতি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির রক্ষার ক্ষেত্রে ভীষন ক্ষতিকর। যা আমরা পার্শ্ববর্তী দেশ সমূহে সময়ে সময়ে দেখে থাকি ( আজকের রোহিঙ্গা সমস্যাও এই সাম্প্রদায়িক মানসিকতার ফল) ।
রাষ্ট্র বা সরকার যদি একচোখা নীতি হতে সরে তা না আসে, তাহলে শোষণ, লুণ্ঠন, সন্ত্রাস, দূর্নীতি, সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা,জাতিসত্তার নিপীড়ন কোনো ব্যাধিরই শেষ হবে না। আমরা ভুগতে থাকব এবং ভুগতে ভুগতে কেবলি দুর্বল হবো।
বলাবাহুল্য যে, বাংলাদেশের সংস্কৃতি, ভূ-প্রকৃতি, মানুষের মেধা, মানবতাবোধ , সবকিছুই প্রগতির সহায়ক হওয়া সত্ত্বেও শুধুমাত্র এই সাম্প্রদায়িকতার কারণেই পিছিয়ে পড়ছে সমগ্র বিশ্ব হতে । যা আমাদের চিন্তা করা উচিত। এই সাম্প্রদায়িকতা প্রগতির অন্তরায়, যা অস্বীকার করার উপায় নাই। তাই মানবতার শত্রু এই সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হওয়া- আজ সময়ের দাবীতে পরিণত হয়েছে। আমরা ধার্মিক হবো, কিন্তু ধর্মান্ধ হবো না। আমরা ‘সম্প্রদায় নিরপেক্ষ’ হবো, ‘সম্প্রদায়হীন’ হবো না। আমরা মানবতাবাদি মানুষ হবো, ‘সাম্প্রদায়িক অমানুষ’ হবো না – এই হোক আজকের অংগীকার। ‘সবার উপরে মানুষ সত্য’- এই বাণী যেন পৃথিবীতে সুপ্রতিষ্ঠিত হয় – এই হোক সবার কামনা।
লেখকঃ কলামিস্ট ও সমাজকর্মী।
mkhanctgbd@yahoo.com