পর্যটন নগরী কক্সবাজারে জলাবদ্ধতা নিরসনে নালার ওপর নির্মাণ করা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে পরিচালিত অভিযান অব্যাহত রেখেছে পৌর পরিষদ। অভিযানের দ্বিতীয় দিন সোমবার (১৫ জুলাই) কক্সবাজার শহরের লাইট হাউজ পাড়ায় নালার ওপর থাকা রিকশার গ্যারেজসহ ৫টি স্থাপনা ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে।
এদিন সকাল থেকে কক্সবাজার শহরের তারাবানিয়ার ছড়া হয়ে পাহাড়তলী—লাইট হাউস এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃর্ণ এলাকা ঘুরে দেখেন কক্সবাজার পৌর মেয়র মো. মাহাবুবুর রহমানের নেতৃত্বে পৌর পরিষদ।এ সময় নালার ওপর তৈরি রিকশার গ্যারেজ, বসতি বা রান্নার ঘর এবং বাসাবাড়ির বর্জ্যের স্তুপ দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি।
এ সময় মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী পৌরবাসীকে বাসাবাড়ির বর্জ্য নির্ধারিত স্থানে রাখার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘নালায় বর্জ্য রাখার কারণে পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধতা তৈরি হচ্ছে। দয়া করে বর্জ্য নির্ধারিত স্থানে বা পলিথিনে করে বাড়িতেই রাখুন। পরিচ্ছন্ন কর্মীরা এসব বর্জ্য নিয়ে যাবে।’
পৌর মেয়র অভিযোগ করে বলেন, ‘পরিচালিত উচ্ছেদ অভিযানে প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানানোর পরও কোন প্রকার সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না। তবে জনগণের সহযোগিতায় অভিযান অব্যাহত রাখা হবে।’
মো. মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী জানান, কক্সবাজার শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোট ৫টি নালা। এই নালা দখলকারী হিসেবে জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে গত কয়েক বছর আগে একটি তালিকা তৈরি হয়েছে। যে তালিকা তৈরির কাজে সিনিয়র সাংবাদিকসহ জেলার বিশিষ্টজনরা ছিলেন। ওই তালিকাটি ধরেই অভিযান শুরু হয়েছে। নালা আগের অবস্থানে না ফেরা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।
গত বুধবার (১০ জুলাই) রাত থেকে কক্সবাজারে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়। শুক্রবার পর্যন্ত অব্যাহত ছিল ওই বৃষ্টি। আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় ৩০৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই বৃষ্টিতে কক্সবাজার জেলাজুড়ে দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। শহরের প্রধান সড়ক, উপসড়ক তলিয়ে বসতবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে পড়ে পানি। যে জলাবদ্ধতা আগে দেখেনি শহরবাসি। ফলে উদ্বেগ—উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেন শহরবাসী।
এর পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার বিকালে কক্সবাজার পৌরসভা কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জরুরি সভার পর পর্যটন নগরী কক্সবাজারের জলাবদ্ধতা নিরসনে রবিবার থেকে নালার অবস্থান নির্ধারণ, দখল করে নির্মিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েছে কক্সবাজার পৌর পরিষদ। ঘোষণা অনুযায়ী রবিবার থেকে এই অভিযান চলছে।
চকো/জে