উখিয়া উপজেলা প্রশাসন, বন বিভাগ ও পুলিশ পালংখালী এলাকায় যৌথ অভিযান চালিয়ে গত ৭ ডিসেম্বর ৭টি অবৈধ স’মিল জব্দ করেছে।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নিজাম উদ্দিন আহমেদ’র সাথে পরিবেশ উন্নয়নের ব্যাপারে আলাপ করা হলে তিনি জানান, সবুজ সম্পদে ভরপুর এ উপজেলার বন সম্পদ রক্ষা ও উন্নয়নের ব্যাপারে অবৈধ স’মিল জব্দ, নির্বিচারে বালি উত্তোলন, পাহাড় কাটা ও আবাদি জমির মাটি কেটে পাচার, চাষাবাদের জমিতে নির্বিচারে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধে স্থানীয় যুবসমাজ ও সচেতন মহলকে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, এ উপজেলায় যোগদানের পর থেকে বালি উত্তোলন বন্ধে ব্যাপক ভূমিকা রাখা হয়েছে, যা এখনো বিদ্যমান রয়েছে। জব্দ করা হয়েছে বেশ কিছু অবৈধ বালি ও পাহাড়কাটার যানবাহন। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক সমপরিমাণ জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
ইটভাটা ও অবৈধ স’মিল প্রসঙ্গে নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অবৈধ ভাবে প্রতিষ্ঠিত ইটভাটা ও স’মিল বন্ধে যেকোন সময় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি এব্যাপারে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের সহযোগীতা কামনা করেন।
ইনানী শেখ জামাল জাতীয় উদ্যান পরিচালনা কমিটির সভাপতি শহিদুল্লাহ কায়সার জানান, ইনানীর সংরক্ষিত বনাঞ্চল সংলগ্ন ১০ হাজার হেক্টর বনভূমির উন্নয়নে তারা কাজ করছে। কিন্তু স্থানীয় কিছু সংখ্যক দুর্বৃত্ত বন সম্পদ লুটপাট, পাহাড় কেটে মাটি পাচার ও নির্বিচারে বালি উত্তোলনের ফলে সরকারের মহান উদ্যোগ ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
তবে বনভূমি সংরক্ষণে নিয়োজিত এনজিও সংস্থা আরণ্যক ফাউন্ডেশনের প্রজেক্ট অফিসার মোঃ আবু সরওয়ার জানান, বনসংলগ্ন এলাকায় যেসব মানুষ এতদিন বন নির্ভর হয়ে জীবন জীবিকা নির্বাহ করেছে তাদেরকে ফাউন্ডেশন অর্থায়ন করে ভিন্ন পেশায় সম্পৃক্ত করেছে। বর্তমানে তাদের অনেকেই স্বাবলম্বী। যে কারণে আগের তুলনায় বনের গাছ গাছালী কর্তন বা চুরি হচ্ছে না। তবে তিনি বলেন, কোর্টবাজারসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু অবৈধ স’মিল স্থাপন করা হয়েছে। এসব স’মিলে চিরাই করা হচ্ছে বনের এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন গাছগাছালী। যা পরিবেশ উন্নয়নে বাধাঁগ্রস্থ হচ্ছে বলে ওই কর্মকর্তা দাবী করেন।
উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী মোঃ শফিউল আলম বলেন, অবৈধ করাতকল গুলো উচ্ছেদের ব্যাপারে তৎকালীন বন রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ ইব্রাহিম হোসেন উপজেলার মাসিক সমন্বয় সভায় ৩০টি অবৈধ করাত কল উচ্ছেদের ব্যাপারে একটি প্রতিবেদন দাখিল করলেও উচ্ছেদ কার্যক্রম বাস্তবায়ন হয়নি।
ফলে সংঘবদ্ধ এসব করাতকল ব্যবসায়ী আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। দিন দিন বাড়ছে অবৈধ করাত কলের সংখ্যা। তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পালংখালী এলাকায় ব্যাপক অভিযান চালানো হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের আন্তরিক সহযোগিতায় বাস্তবায়িত এ অভিযানে ৭টি অবৈধ করাতকল উদ্ধার করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বন আইনে পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে উখিয়া থানায়।