১৬ জুলাই ২০০৭ প্রত্যুষে গ্রেপ্তার করা হল গণতন্ত্রের মানসকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে। কয়েক মাস আগের থেকেই আলামত পাওয়া যাচ্ছিল।
ফখরুদ্দিন মইনুদ্দীন সরকার সদ্য বিদায়ী সরকারের দুর্নীতির কথা প্রথম কয়েকদিন জোরেসোরে বললেও কয়েকদিনের মধ্যে হিসাব বদলে গেল। যাদের দুর্নীতি এবং অপশাসনের কারনে ১/১১ র সরকার আসল তাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পরিবর্তে জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেই প্রথম পদক্ষেপ গ্রহণ করল। ১২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র সফররত শেখ হাসিনার উপর দেশে ফিরার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার মাধ্যমে তাদের পরিকল্পনা জনসম্মুখে আনল।
অপ্রতিরোধ্য শেখ হাসিনা তাৎক্ষণিক সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশের পথে লন্ডনের হিত্রো বিমানবন্দরে আসার পর বৃটিশ এয়ারওয়েজ নিষেধাজ্ঞার কারনে বোর্ডিং পাশ দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে কয়েক হাজার নেতাকর্মী সহ শতাধিক বিদেশী সংবাদকর্মীর সামনে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানালে তা বিশ্ব সংবাদ মাধ্যমের প্রধান খবর হয়। কয়েকদিনের মধ্যে সরকার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেত্রীকে দেশে ফেরার সুযোগ দিতে বাধ্য হয়।
সেই সামরিক শাসনের চেয়েও কঠিন জরুরী অবস্হায় বিমান বন্দর থেকে ৩২ নাম্বার পর্যন্ত কয়েক লক্ষ নেতাকর্মীর বিশাল গণসম্বর্ধনায় সরকার হতভম্ব হয়ে পড়ে। তারপর থেকেই তাঁকে গ্রপ্তারের জন্য পঠভুমি তৈরী করা হয়। দুজন ব্যবসায়ীকে ক্যন্টনমেন্টে ধরে নিয়ে জোর করে তাদেরকে দিয়ে ভিত্তিহীন মামলা দায়ের করানো হয়।
গ্রেপ্তারের কয়েকদিন আগে সভানেত্রীর আমেরিকা যাত্রা সুধাসদনের সামনে ব্যরিকেট দিয়ে বন্ধ করা হয়। তার পর থেকে গ্রেপ্তার পর্যন্ত সেই ব্যরিকেট থাকে। কাউকে সুধাসদনের ভিতরে যেতে বা বাহির হতে দেয়া হত না। আমাদের সাথেও দেখা সাক্ষাত বন্ধ হয়ে যায়। টেলিফোনেই যোগাযোগ হচ্ছিল।
প্রয়াত প্রেসিডিয়াম সদস্য আতাউর রহমান খান কায়সার সর্বপ্রথম বেরিকেটের সামনে এসে ভিতরে যেতে না দেয়ায় প্রচন্ড প্রতিবাদ করেন এবং সেখানে অবস্হান নেন। তার পরে লতিফ সিদ্দিকি সাহেবও গিয়ে প্রচন্ড প্রতিবাদ করেন।যেকখা বলছিলাম।
১৬ জুলাইয়ের ২/১ দিন আগের থেকে বুঝা যাচ্ছিল নেত্রীকে গ্রপ্তার করা হবে। রাত ১১ টার পরে আমাদের সোর্সদের একজন জানাল যে আজই গ্রপ্তার করা হবে।কোথায় নেয়া হবে তাও জানাল। সাখে সাখে আপাকে জানালাম ফোনে। আপা জিজ্ঞাস করলেন কখন আসবে। জানালা রাত ২ টার পরে। জিজ্ঞাস করলেন কোথায় নিবে।
জানালাম গুলশানে হারিসীতে চৌধুরীর পরিত্যক্ত বাড়ীতে এবং সেটা ready করা হয়েছে।তিনি বললেন ঐ চোরা বাড়ীতে আমি থাকব না(হারিস টৌধুরী পালিয়ে যাওয়ার পর ঐ বাড়ী সরকার বাজেয়াপ্ত করে এবং ঐ বাড়ীতে প্রাপ্ত জিনিষপত্রের তালিকা দেখলে মানুয়ের চোখ কপালে উঠে। Talk otf the country ছিল সেই বাড়ীটি)।
ভোররাতেই আপাকে অপমানজনভাবে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেল অর্বাচিনের দল। আমরা অনেকেই লেকের ও পার থেকে অবলোকন করলাম। আপার প্রতিবাদের কারনে আর সেই ববাসায় ওনাকে রাখা হয় নাই।অনেক স্মৃতি, অনেক কথা। অনেক কিছুই জানা, অনেকর কর্মকান্ড চোখে দেখা।সবকিছু বলা যায়না, বলা সম্ভবওনা।
প্রকৃত বিচারে যাদের ইতিহাসে র আস্তকুরে নিক্ষিপ্ত হওয়ার কথা তাদের অনেকেই আজ ক্ষমতার মসনদের উচ্চাশনে।যাদের ত্যাগ শ্রম এবং কর্মকান্ড সেই অন্ধকার কাটিয়ে উঠতে বিশাল ভুমিকা রেখেছে তাদের অধিকাংশই আজ বিলিন হয়ে গেছে।বেঈমান আর বর্ণচোরাদেরই আজ জয় জয়কার।
আজকের দিনে এসে আবারও সেই পুরোনো সূর শুনছি। একই ষড়যন্ত্র চলছে। তবে ২০২৩ এর শেখ হাসিনা অনেক বেশী প্রাজ্ঞ এবং পরিপক্ষ। ঘর এবং বাইরের সব ষরযন্ত্র মোকাবিলার করে তিনি অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাবেন এটাই আমাদের বিশ্বাস। জয় বাংলা।