কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া হতে রাজাখালী ইউনিয়নের সাথে সংযোগ সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় দুই ইউনিয়নের আনুমানিক ৩৮ হাজার মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রকল্পের নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হলেও সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে মাত্র পনেরো শতাংশ। দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গত সাত মাস ধরে সেতুর নির্মাণকাজ ফেলে চলে গেছে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে জন ও যান চলাচলে ব্যাপক ভোগান্তি হচ্ছে। এনিয়ে এলাকায় ক্ষোভে বিরাজ করছে।
উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রাজাখালী (মগনামা) ভোলা খালের ওপর ৩১ ফিট দৈর্ঘ্য ও ২৪ ফিট প্রস্থ সেতু নির্মাণে ৭ কোটি ৯২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে মেসার্স আবুল কালাম আজাদ কনস্ট্রাকশন নামে দিনাজপুরের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ সম্পন্ন করার জন্য কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছিলো।
স্থানীয়রা জানায়, গত দুই বছর ধরে নাপিতখালী ভোলাখালের ওপর নির্মিত পুরাতন সেতু ভেঙে নতুন সেতু নির্মাণের নামে স্থানীয় সরকার ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান একধরনের পাঁয়তারা করেছে। জোয়ার ভাটার এই খালে গত দুই বছর ধরে বাঁধ দিয়ে পানি নিষ্কাশন বন্ধ করে রাখে। এতে নৌকা চলাচলে ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি খাল বরাট সহ পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। জোয়ার ভাটার খালের ওপর (প্রস্তাবিত সেতুর পাশে) বিকল্প সড়ক হওয়ায় দীর্ঘ পথ ঘুরে সাগরে ট্রলার বের করছে মাঝিরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নির্মাণাধীন সেতুর নির্মাণস্থলে ৪৪ টি পাইলিংয়ের স্থানে ১৬ টির আংশিক কাজ শেষ হয়েছে। বিকল্প সংযোগ সড়কটি ও প্রায়ই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অস্থায়ী ভাঙা সড়কে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। বড় কোন গাড়ি পারাপার হলেই সড়ক দেবে যাচ্ছে।
এই বিষয়ে জানতে বারবাকিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ফাশিয়াখালী কামিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা বদিউল আলম জিহাদি জানান, বারবাকিয়া রাজাখালী সংযোগ সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে গেছে অনেক আগে, এই কারণে তাদের সাথে যোগাযোগ করলে তাঁরা জানায় তাঁদের টেন্ডার বাতিল হয়েছে এবং তাদের কে জরিমানা করা হয়েছে।
এবিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মের্সাস আবুল কালাম আজাদ কনস্ট্রাকশনের (প্রতিনিধি) চঞ্চল সাহার কাছে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, প্রকল্পের নির্ধারিত মেয়াদে নির্মাণাধীন সেতুর দৃশ্যমান কোন কাজ করতে না পারায় আমাদের টেন্ডার বাতিল হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে পেকুয়া উপ সহকারি প্রকৌশলী শাহজালাল জানান, সেতুর নির্মাণ কাজে অনিয়ম ও গাফেলতির কারণে মের্সাস আবুল কালাম আজাদ কনস্ট্রাকশনের টেন্ডার বাতিল হয়েছে। এবং তাদেরকে জরিমানা করা হয়েছে। আমরা নতুন করে কার্যাদেশ পাটিয়েছি।
