নওগাঁ জেলার বদলগাছি থানার দুধকুড়ি এলাকায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) একটি সফল অভিযানে দস্যুতা চক্রের মূলহোতাসহ তিনজন দস্যুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। র্যাব-৫, সিপিসি-৩, জয়পুরহাট ক্যাম্পের এই অভিযানটি ১ নভেম্বর ২০২৪ ভোরবেলায় পরিচালিত হয়। অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল দীর্ঘদিন ধরে নওগাঁ ও জয়পুরহাট এলাকায় দস্যুতা কার্যক্রম চালানো এক সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের মূলহোতাকে আইনের আওতায় আনা।
র্যাব জানায়, গতকাল ভোর ৫টা ৪৫ মিনিটে দুধকুড়ি এলাকায় সংঘটিত এই ছিনতাইয়ের ঘটনাটি সংঘটিত হয়। দস্যুরা যাত্রী বেশে একটি ইজিবাইকে ওঠে এবং চালক খলিলুর রহমানকে ছুরি দিয়ে ভয় দেখিয়ে ইজিবাইকটি ছিনিয়ে নেয়। তারা চালককে রশি দিয়ে বেঁধে পাশের ধান ক্ষেতে ফেলে রেখে যায়। চালকের সাহায্যের জন্য চিৎকারে এলাকার লোকজন ঘটনাস্থলে এসে সন্দেহভাজনদের ঘিরে ফেলে। এসময় র্যাবের টহল দল দ্রুত সেখানে পৌঁছায় এবং স্থানীয় জনগণের সহায়তায় দস্যু চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন—দস্যু চক্রের মূলহোতা মো. হেলাল হোসেন (৪২), তার সহযোগী মো. হেলাল উদ্দিন (৪৪), এবং মো. কালাম তালুকদার (৩৬)। তাদের সকলের বিরুদ্ধে পূর্বেও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। অভিযানে পলাতক রয়েছে আরেক অভিযুক্ত, যার নাম মো. আবু হাসান (২৫)। র্যাব জানায়, পালিয়ে যাওয়া এই আসামিকে আটক করতে গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
অভিযানে র্যাব ছিনতাইকৃত ইজিবাইক ছাড়াও দস্যুতার কাজে ব্যবহৃত একটি রশি ও চারটি ছুরি উদ্ধার করে, যা পরবর্তী প্রক্রিয়ার জন্য আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে। র্যাবের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, এ ধরনের সংঘবদ্ধ অপরাধ দমন করার ক্ষেত্রে স্থানীয় জনগণের সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে, যা এই অভিযানে বিশেষভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, র্যাব প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় অপরাধ দমন ও অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে অব্যাহতভাবে কাজ করছে। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, সংঘবদ্ধ অপরাধ, মাদক, অস্ত্র, ছিনতাই, প্রতারণা ও হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধের বিরুদ্ধে র্যাব নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। বর্তমান অভিযানও সেই ধারাবাহিক কার্যক্রমের অংশ, যেখানে নওগাঁ ও আশপাশের এলাকাগুলোর মানুষকে নিরাপদ রাখতে র্যাব নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
এই ঘটনায় গ্রেফতারকৃত তিন আসামির বিরুদ্ধে বদলগাছি থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। র্যাবের এ ধরনের অভিযানে জনগণের আস্থা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি তাদের সহায়তা ও সহযোগিতা আরও সুদৃঢ় হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। র্যাবের সদস্যরা আশাবাদী, পালিয়ে যাওয়া আসামিকেও দ্রুত গ্রেফতার করা সম্ভব হবে এবং দস্যুতা চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।