কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টা মামলা হওয়ায় সকল ধরণের নাগরিক সেবা বন্ধ করে দিয়েছে পৌর পরিষদ। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে সেবা নিতে আসা পৌরবাসীরা।
রবিবার মধ্যরাতে কক্সবাজার পৌরসভা প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মেয়র মুজিবুরের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাটি প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত কক্সবাজার পৌরসভা কোন ধরণের নাগরিক সেবা দিবে না। এক জরুরী সভায় পৌর পরিষদ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কক্সবাজার পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান চৌধুরী’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত মতে, মেয়র মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক সেই মামলা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, চলমান সড়ক উন্নয়ন কাজ এবং জাতীয়তা-জন্ম মৃত্যু সনদসহ পৌরসভার সব ধরনের নাগরিক সুযোগ সুবিধা বন্ধ করে দেয়ার ঘোষনা দেন কাউন্সিলরবৃন্দ।
সদর থানা সূত্র জানায়, ২৭ অক্টোবর রাত সাড়ে ৯ টায় শহরের সুগান্ধা পয়েন্টে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি মোনাফ সিকদারকে গুলি করা হয়। তিনি বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ওই ঘটনায় আহত মোনাফ সিকদারের ভাই শাহাজাহান সিকদার বাদী হয়ে পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, তার ব্যিক্তিগত সহকারী এবি ছিদ্দিক খোকন এবং কক্সবাজার সদর রামু আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলের ছোট বোন ও জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নাজনীন সরওয়ার কাবেরী সহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করে। এতে আরো ৭/৮ জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে।
এদিকে মামলাটি রুজু হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে পৌরসভার গাড়ি ব্যবহার করে রাস্তায় ব্যারিকেড দেয় পৌর পরিষদ । রোববার রাত ১০ টা পর্যন্ত পৌরসভার কাউন্সিলর, সুইপার, ঝাড়ুদার সহ সকল কর্মকর্তা কর্মচারী সড়কে অবস্থান নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে রাখে। পরে নাগরিক সেবা বন্ধের ঘোষনা দিয়ে তারা রাস্তা থেকে সরে যায়।
সোমবার সাড়ে ১০ টায় সরজমিনে কক্সবাজার পৌরসভায় গিয়ে দেখা যায়, পৌরসভার প্রধান ফটক বন্ধ রয়েছে। ভেতরে সেবা প্রার্থীদের প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। ওইসময় কথা হয় কয়েকজেন সেবা গ্রহীতাদের সাথে।
এ বিষয়ে সেবা নিতে আসা সালমা বেগম বলেন, তিনমাসেরও আগে মেয়ের জন্মনিবন্ধনের ভুল সংশোধন করতে দিয়েছি। আজকাল বলে এখনো দেয়নি। সোমবার অবশ্যই দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজ তো ভেতরেই ডুকতে দিচ্ছে না। অথচ স্কুলে জমা দেওয়ার শেষ দিন মঙ্গলবার।
আরেকজন বলেন, মামলা করেছে যুবলীগ নেতার ভাই। মামলা হয়েছে ব্যক্তি মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে। এখানে কোন যুক্তিতে পৌর পরিষদের সেবা বন্ধ করেছে সেটাই বুঝছি না। আমরা জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করেছি সেবার জন্য। এখন দেখছি ভোগান্তি তৈরি করা পৌর পরিষদের কাজ।
পৌর পরিষদের সেবা বন্ধের বিষয়ে কক্সবাজার পৌরসভার প্যানেল মেয়র ২ ও শহর আওয়ামীলীগ নেতা হেলাল উদ্দিন কবির বলেন, মেয়র মুজিব জনপ্রিয় নেতা। তার জনপ্রিয়তায় ইর্ষাণ্বিত হয়ে একটি মহল মিথ্যা মামলাটি দায়ের করেছে। মিথ্যা মামলাটি প্রত্যাহার করা হলে মেয়র মুজিবুরের নির্দেশ পেলেই সেবা কার্যক্রম পূণরায় চালু করা হবে ।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কক্সবাজারের উপসচিব (ডিডিএলজি ) শ্রাবস্তী রায় বলেন, নাগরিক সেবা যে বন্ধ আমি জানতামনা। এটি কোনভাবেই করতে পারেনা পৌরসভা।
কক্সবাজার পৌরসভার প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম নাগরিক সেবা বন্ধের বিষযটি না কথা বলতে চাইলে তিনি ব্যস্ত আছেন পরে কথা বলবেন বলে মুঠোফোনের লাইন কেটে দেন।