বান্দরবানের লামা উপজেলায় বন্ধ হচ্ছে না খাল, ছড়া ও নদী থেকে ড্রেজার বসিয়ে অবধৈভাবে বালু উত্তোলন। স্থানীয় অসাধু কিছু বালু সিন্ডিকেট ও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় একটি চক্র ইজারাবিহীন অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করার ফলে প্রতি বছরই ভাঙনের মুখে পড়ছে বসত বাড়ি, ফসলি জমি, রাস্তা- ঘাট, কালভার্ট ও ব্রিজসহ সংরক্ষিত বনাঞ্চল।
উপজেলার লামা পৌরসভা, আজিজ নগর, সরই, ফাইতং ও বৃহত্তর ফাঁসিয়াখালি ইউনিয়নের বগাইছড়ি খাল, ভাল্লুকা ঝিড়ি, আমতলী পুলু খাল, ভাইগ্যার দোকান পাড়া, কিল্লাখোলা, ফাদুরছড়া, মিশনপাড়া ইসলামপুরসহ প্রায় অসংখ্য জায়গায় সংঘবদ্ধ চক্র বালু মহাল নীতিমালার তোয়াক্কা না করে অবৈধ পন্থায় বালু উত্তোলন করে চলেছেই।
স্থানীয় এলাকা বাসিরা জানান, গ্রামের পর গ্রাম ও ঘরবাড়ি চলে যাচ্ছে নদী গর্ভে, এবং নদী ভাঙনের কারনে শত শত পরিবার বাস্তুচ্যুত হচ্ছে। পাশাপাশি সহায় সম্ভল হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন অনেকে। অপরিকল্পিত ভাবে বালু উত্তোলনের কারনে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বগাইছড়ি খালের উপর নির্মিত পিসি গার্ডার ব্রিজ, ইয়াংছা খালের উপর নির্মিত বনপুর বড়মার্মা পাড়া ব্রিজ, বড় ছন খোলা ব্রিজ, সরই ইউনিয়নের পুলু খালে নির্মিত হাসনাভিটা ব্রিজ ভাঙনের কবলে পড়েছে।
উপজেলার চারটি ইউনিয়নের বিভিন্নস্থানে সরেজমিনে দেখা যায়, সরকারি অনুমোদন বা ছাড়পত্র ছাড়াই নিয়ম নীতি না মেনে কতিপয় ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট প্রভাব বিস্তার করে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে স্থানীয় এই চক্র বালু উত্তোলন ও বিক্রি অব্যাহত রেখেছে। চক্রটি প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয়রা তাদের বিষয়ে মুখ খুলছেনা।
নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের ফলে পরিবেশের উপর এর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে জানান স্থানীয় সচেতন মহল। স্থানীয়দের দাবী কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুগুলো রক্ষায় এখনই বালু উত্তোলন বন্ধে উপজেলা প্রশাসনের আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক আব্দুস সালাম বলেন, বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত বেশ কয়েক জনের নাম তালিকাভুক্ত করে চট্রগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক বরাবর পাঠিয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রেজা রশিদ বলেন, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গত (১৬ আগস্ট ও ৯ সেপ্টেম্বর) মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ৫টি বালুর স্তুপে প্রায় ৪ লক্ষ ঘনফুট বালু জব্দ করা হয় এবং বালু তোলার মেশিন ও সরঞ্জমাদী ধ্বংস করা হয়েছে। অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট অভিযান চলমান থাকবে।