সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার চতুর্থ দফায় সাক্ষ্যগ্রহণ আগামী মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে। কক্সবাজার জেলা জজ আদালতে পরদিন বুধবার পর্যন্ত টানা দুইদিন মামলার সাক্ষীদের এই সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে। এরআগে তিন দফায় মামলার ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়। এ মামলায় মোট ৮৩ জন সাক্ষী রয়েছে বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী, কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম।
তিনি জানান, মামলায় আরো ৬৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে। এরমধ্যে চতুর্থ দফায় টানা দুইদিনে আদালতে উপস্থিত থেকে সাক্ষ্য প্রদানের জন্য মামলার পরবর্তী কয়েকজন সাক্ষীকে সমন দেয়া হয়েছে।
এরআগে গত ২৩ আগস্ট থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রথম দফায় টানা তিনদিনে মামলার বাদী শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস ও একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী সাহেদুল ইসলাম সিফাতের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছিল। এরপর গত ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দ্বিতীয় দফায় টানা চার দিনে আরো চারজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও আসামি পক্ষের আইনজীবীদের জেরা সম্পন্ন হয়। সর্বশেষ গত ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তৃতীয় দফায় টানা ৩ দিনে আরো আট জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
গত বছরের ৩১ জুলাই ঈদুল আযহার আগের রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফের বাহারছড়ার এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলীতে খুন হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদ খান। এ ঘটনার ৫দিন পর ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের তৎকালীন ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে প্রধান আসামি এবং টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ নয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান র্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম। চার মাসের বেশি সময় ধরে চলা তদন্তের পর গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্তকারীরা কর্মকর্তা। অভিযোগপত্রে সিনহা হত্যাকান্ডকে একটি ‘পরিকল্পিত ঘটনা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
এ আলোচিত মামলার ১৫ আসামী হলেন- টেকনাফের বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, তার দেহরক্ষী রুবেল শর্মা, টেকনাফ থানার এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাগর দেব, এপিবিএনের এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজীব, মো. আবদুল্লাহ, পুলিশের মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নিজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন। গত ২৭ জুন ফৌজদারী দন্ডবিধির ৩০২/২০১/১০৯/ ১১৪/১২০-খ/ ৩৪ ধারায় ১৫ আসামীর বিরুদ্ধে মামলাটির বিচারের জন্য অভিযোগ গঠন করা হয়।