এস এম হানিফ
সাপ্তাহিক মাতামুহুরী পত্রিকা এ জনপদে আলোচিত ও জনপ্রিয় পত্রিকা। ১ সেপ্টেম্বর পত্রিকাটি ২০ বছর পূর্তি করেছে। অভিনন্দন সাপ্তাহিক মাতামুহুরী ও মাতামুহুরীর সঙ্গে সম্পর্কিত সবাইকে। বিশেষ করে অভিনন্দন জানাই যাঁর অক্লান্ত পরিশ্রমে পত্রিকাটি পাঠকের হাতে নিয়মিত পৌঁছাচ্ছে সেই আমার প্রিয় সহকর্মী চকরিয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মিজবাউল হককে।গত ১ সেপ্টেম্বর পত্রিকাটি ধুমধাম করে বর্ষপূর্তি পালন করেছে। ধুমধাম করে এই অনুষ্ঠান হওয়ারই কথা। কারণ পত্রিকাটি তেমনই। এই অনুষ্ঠানে ১ নম্বর থেকে ২০ নম্বর পর্যন্ত অতিথির তালিকা ঘেঁটে দেখা যায় সব নামই রাজনৈতিক নেতাদের। পত্রিকার অনুষ্ঠান, কিন্তু আধিক্য রাজনৈতিক নেতাদের। আমরা সংবাদকর্মীরা এভাবেই স্বকীয়তা হারাচ্ছি। বিষয়টি আমাকে অবাক করলো। অনুষ্ঠানে সবে ধন নীল মনির চেয়ারে বসে একধরনের কোণঠাসা ছিলেন চকরিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহেদ চৌধুরী।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকতে কক্সবাজার থেকে ছুটে এসেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান। তাকে অভিনন্দন ও তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। অথচ এই অনুষ্ঠানে কক্সবাজার থেকে আসার দরকার ছিল কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের সভাপতি/সম্পাদক, সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি/সম্পাদক অথবা অন্য পদধারী বা পথবিহীন সাংবাদিক নেতাদের। হলো না তা। হয়েছে মিডিয়াপাড়ায় রাজনৈতিক নেতাদের সরব উপস্থিতি। এভাবেই কি আমরা সংবাদকর্মীরা নিজেরা রাজনৈতিক নেতাদের কাছে নিজেদের সমর্পন করছি! যদিও অনেকে ‘মেয়র মুজিব একটি পত্রিকার সম্পাদক’ এই খোড়া যুক্তি দিতে পারেন । আমি বলি মুজিব ভাই রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধি হিসেবে সমধিক পরিচিত। তিনি মুজিব চেয়ারম্যান থেকেই কিন্তু পত্রিকার সম্পাদক নাম ধারণ করেছেন।অনুষ্ঠানের ছবিগুলোর দিকে তাকালে প্রথম দেখাতেই যে কেউ মনে করতে পারে এটি আওয়ামী লীগের কোনো প্রোগ্রাম। এতো নেতাদের ভিড় ছিল সেখানে। পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক মিজবাউল হক নিজেও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। হয়তো সে কারণে! কিন্তু এটি পত্রিকা। নিরপেক্ষতার কথা বলতে হবে। অন্তত প্রগতিশীল সব রাজনৈতিক নেতাদের উপস্থিতি বাঞ্চনীয় ছিল।ব্যাপারটি এখন এমন যে, কামারের অনুষ্ঠানে কৃষক, শিক্ষকের অনুষ্ঠানে জেলে নেতারা অতিথি হচ্ছেন। শুধু মাতামুহুরী পত্রিকার বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান নয়, প্রায় সব অনুষ্ঠানে এখন এ ধারা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যেমন রাজনীতি দখল করেছে ব্যবসায়ী নেতারা। সাংবাদিকতা কেড়ে নিয়ে গেছে অশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত স্টেশনারী দোকানের কর্মচারী থেকে শুরু করে মাদক ব্যবসায়ীরা। এই সব থেকে পরিত্রাণ দরকার। সরকারকে বলি, সাংবাদিকতা পেশার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা ঠিক করুন। অন্তত স্নাতক পাস ব্যক্তিদের সাংবাদিক বানান।সবশেষে বলি, আমরা যাঁরা তৃণমূলে কাজ করি আমাদের সঙ্গে জেলা বা বিভাগীয় শহরে যাঁরা কাজ করেন বা নেতৃত্ব দেন তাঁদের সঙ্গে সম্পর্ক নেই। আবার তাঁরাও আত্মঅহংকারে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন না। এই গ্যাপের সুযোগ নিয়ে মিডিয়াপাড়ায় রাজত্ব করছে রাজনৈতিক মোড়লরা। মিডিয়াপাড়ায় তাঁদের এভাবে পদচারণা থাকলে ‘উইথইন শর্ট টাইম’ আসল সাংবাদিকতা বিলুপ্ত হবে। তখন রাজনৈতিক নেতারা নতুন প্যাটার্নের নতুন সাংবাদিকতার উদ্ভব ঘটাবেন।এজন্য বলি সময় থাকতে সাবধান হোন।
85Sajid Hossen Sakib, Tanvir Ahmad Siddique Tuhin and 83 others16 Comments1 Share