জাপানের কাগোশিমা সিটি কর্তৃক কাগোশিমা সিটি ফ্রেন্ডশিপ পার্টনার হিসেবে মনোনীত হলেন বাংলাদেশি তোফাজ্জল মো. রাকিব। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১১ জন এই পুরস্কার পেয়েছেন। সাধারণত যাঁরা সব কমিউনিটির সাথে সংস্কৃতির বিনিময় করে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান তাঁরা এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন।
তোফাজ্জল মো. রাকিবের বাড়ি কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার শিলখালী ইউনিয়নের মুন্সিমোড়া গ্রামে। তিনি ২০১৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) প্যাথলজি ও প্যারাসাইটোলজি অনুষদের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত থেকে পিএইচডি করতে জাপান যান। এর আগে ২০১৬ সালের ৩ আগস্ট থেকে ২০১৮ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত একই বিভাগের প্রভাষক ছিলেন।
জাপান সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিক্ষাবৃত্তি নিয়ে ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত কাগোশিমা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি গবেষক হিসেবে ছিলেন।
তাঁর ডক্টরাল গবেষণা হচ্ছে প্যাথোফিজিওলজি এবং প্রাণিদের জেনেটিক ব্যাধিগুলোর আণবিক বৈশিষ্ট্যের ওপর।তাঁর পিএইচডি সুপারভাইজার ছিলেন কাগোশিমা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের অধ্যাপক ড. ওসামো ইয়ামাতু।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে কাগোশিমা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি মেডিসিন স্কুলে গবেষক হিসেবে কর্মরত আছেন রাকিব।
জানা গেছে, জাপানের খুব পরিচিত ও অভিজাত শহর হচ্ছে কাগোশিমা৷ এই শহরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজে সাংস্কৃতিক বিনিময় (cultural exchange) নামে একটা প্রোগ্রাম আছে।
এই প্রোগ্রামে যাঁরা পারদর্শিতা দেখাতে পারেন এবং যাঁরা বিভিন্ন দেশের লোকদের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক তৈরি করতে পারেন তাঁদের কাগোশিমা সিটি ফ্রেন্ডশিপ পার্টনার মনোনীত করা হয়।
তোফাজ্জল মো. রাকিব বলেন, আমি বিভিন্ন স্কুলে বাংলাদেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে ছাত্র-ছাত্রীদের লেকচার দিয়েছি। এতে কাগোশিমা সিটি কর্তৃপক্ষ মুগ্ধ হয়ে ও যাচাই-বাচাই করে আমাকে ‘কাগোশিমা সিটি ফ্রেন্ডশিপ পার্টনার’ মনোনীত করেছে।
রাকিব বাংলাদেশ এসোসিয়েশন কাগোশিমা, জাপানের বর্তমান সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি এর আগে সংগঠনটির ২০২১ সালে সহসভাপতি, ২০২০ সালে সাধারণ সম্পাদক ও ২০১৯ সালে সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
রাকিব ২০০৪ সালে কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের মাধ্যমে শিলখালী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি, ২০০৬ সালে চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি, ২০১৩ সালে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভেটেরিনারি মেডিসিন (ডিভিএম) ও ২০১৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্যাথলজিতে মাস্টার্স করেন।
ডিভিএম ডিগ্রিতে (২০১৫) অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য ‘প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক’ পান রাকিব। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে সেই স্বর্ণপদক গ্রহণ করেন তিনি।
ব্যক্তি ও পেশাগত জীবন যাতে আরও সাফল্যময় হয়, সেজন্য তিনি সবার দোয়া চেয়েছেন।