গত দুদিনে বিভিন্ন রোহিঙ্গাক্যাম্প ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় ৩১৯ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ইতোমধ্যে তাদের যাচাই-বাছাই করে সংশ্লিষ্ট রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত টেকনাফ-কক্সবাজার আঞ্চলিক সড়কের কক্সবাজার লিংকরোড এলাকায় অস্থায়ী তল্লাশি চৌকি বসিয়ে বিভিন্ন যানবাহন থেকে ৫৮ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পুলিশ।
এর আগে মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) যানবাহনে তল্লাশি চালিয়ে আটক করা হয়েছে ২৬১ জন রোহিঙ্গাকে। যাদের অধিকাংশের গন্তব্য ছিল কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম।
এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন আহম্মেদ।
তিনি বলেন, কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলামের নির্দেশে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল আমার নেতৃত্বে কক্সবাজার সদরের লিংকরোড সড়কে টেকনাফ- কক্সবাজারমুখী প্রতিটি গাড়ি তল্লাশি চালিয়ে ৫৮ জন রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়।
এর আগে বুধবার আটক করা হয় ২৬১জনকে। তারা অবৈধভাবে আশ্রয় শিবির থেকে বাহির হয়ে পালিয়ে যাচ্ছিল।
পুলিশ জানায়, শরণার্থী রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে নিরাপত্তা বেষ্টনী ফাঁকি দিয়ে উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন আশ্রয় শিবির থেকে কৌশলে পালিয়ে যাচ্ছেন রোহিঙ্গারা। এভাবে পালাতে গিয়ে প্রায় প্রতিদিন কোথাও না কোথাও ধরা পড়ছে তারা। কাজের সন্ধানে তারা আশ্রয় শিবির থেকে বের হয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে। পাশাপাশি প্রায় অশান্ত হয়ে উঠেছে রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরগুলো। আশ্রয় শিবিরে মাদক বিক্রি এবং মাদকের টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়েও ঘটেছে অনেক মারামারি-খুনোখুনি।
ডিবি পুলিশ জানায়, আটক করা রোহিঙ্গারা বিভিন্ন কাজের সন্ধানে বের হয়েছিল। কাঁটাতারের বেড়া ও আশ্রয় শিবিরের অভ্যন্তরে এবং সড়কের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কমপক্ষে ১০টি তল্লাশি চৌকির নিরাপত্তা কর্মীদের ফাঁকি দিয়ে কিভাবে রোহিঙ্গারা দেশে ছড়িয়ে যাচ্ছে, এ বিষয়ে কঠোর নজরদারি করা হচ্ছে। পরে আটক রোহিঙ্গাদের উখিয়া থানার মাধ্যমে রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ে হস্তান্তর করা হয়েছে।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, আটক রোহিঙ্গারা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন কাজের সন্ধানে বের হচ্ছে। রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির থেকে বের হওয়ার নিয়ম নেই। রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তার জন্য আশ্রয় শিবিরগুলোর ভেতরে বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্তত ১০টি তল্লাশি চৌকি স্থাপন করা হয়েছে।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, যারা বিনা অনুমতিতে আশ্রয় শিবির থেকে বাইরে যাচ্ছে, তাদের বিভিন্নভাবে বোঝানো হচ্ছে। কাউন্সেলিং ও এ দেশের আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে তাদের ধারণা দেয়া হয় এবং পরবর্তীতে একই রকম অপরাধে ধরা পড়লে তাদের জেল-জরিমানার ভয় দেখানো হচ্ছে। আটক ব্যক্তিদের ট্রানজিট ক্যাম্পের মাধ্যমে বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে।