কক্সবাজার সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টের বিচ সড়কের উত্তর পাশে রাতের আঁধারে আবারও অবৈধ স্থাপনা নির্মান করছে একটি দখলদার চক্র। এই চক্রটি বাঁশ ,টিন ও পলিথিন দিয়ে রাতারাতি অনেকগুলো দোকান তৈরী করে সেখানে আদালতের নির্দেশনা সম্বলিত একটি সাইনবোর্ডও লাগিয়ে দেয়। রোববার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
সোমবার বিকালে বিষয়টি নজরে আসায় ওইসব অবৈধস্থাপনা গুড়িয়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আমিন আল পারভেজের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসন, কউক ও পুলিশের একটি টিম এই উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ,প্রভাবশালী চক্রটি এই সমুদ্র সৈকত এলাকায় সরকারী জমিতে অবৈধস্থাপনা নির্মান করে সাধারণ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়াসহ নানা অপকর্মে জড়িত রয়েছে। এইসব দোকান বরাদ্দের নামেও এই চক্রটি ইতোমধ্যে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
জানা গেছে,স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা হাজী জসীম উদ্দিন ছিদ্দিকীর নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক শ্রমিক দিয়ে রাতারাতি এ মার্কেট নির্মান করা হয়।
কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আমিন আল পারভেজ বলেন, সমুদ্র সৈকতে সরকারি জমিতে অবৈধস্থানে গড়ে তোলার খবার পেয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এক বছর আগেও ওইস্থান থেকে দোকানপাট উচ্ছেদ করা হয়েছিল।
কিন্তু রোববার রাতের আঁধারে দখলবাজ চক্রটি আবারও অবৈধভাবে ১৫ -২০টি দোকান নির্মান করে। যা গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে এসময় কাউকে আটক করা যায়নি জানিয়ে তিনি বলেন, কারা করছে খবর নেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে মামলাও করা হবে।
প্রসঙ্গত, উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২০২০ সালের ১৭ অক্টোবর কক্সবাজার সুগন্ধা পয়েন্টে ৫২টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসনের যৌথ অভিযানকালে দখলদারদের সাথে সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিকসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়। এ ঘটনায় দখলদারদের বিরুদ্ধে মামলা করে কউক। বছর না পেরোতেই আবারও একই স্থানে দোকানপাট নির্মাণ শুরু করে চিহ্নিত চক্রটি।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলী সুগন্ধা পয়েন্টে ৫২ টি অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল নোটিশ দেয়। এরপর ব্যবসায়ীরা রিট করলে ২০১৮ সালের ১৬ এপ্রিল হাইকোর্ট রুল জারি করে উচ্ছেদে স্থগিতাদেশ দেন। এর বিরুদ্ধে ভূমি মন্ত্রণালয় ও রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে।
পরে, গত বছরের ১ অক্টোবর সমুদ্র সৈকতের কলাতলীর সুগন্ধা পয়েন্টে ৫২ টি স্থাপনা উচ্ছেদে হাইকোর্টের দেওয়া রুল ও স্থগিতাদেশ খারিজ করে দেয় আপিল বিভাগ।
ফলে ওই ৫২ টি স্থাপনা উচ্ছেদে কোনো বাধা না থাকায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে সুগন্ধা পয়েন্টের এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছিল ।