কক্সবাজারের নাজিরারটেক উপকূলে ট্রলার থেকে ১০ ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার মূল নায়ক খাইরুল বশর ওরফে সুমন মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ চট্টগ্রাম শহরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কক্সবাজার সদর মডেল থানার পরিদর্শক (গোয়েন্দা) দুর্জয় বিশ্বাস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তারের পর সুমনকে কক্সবাজারে আনা হয়েছে। উল্লেখ্য গত ২৩ এপ্রিল ১০ ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধারের পর থেকে সুমন আত্মগোপনে চলে যায়। এরপর তার পরিচয় গোপন করতে মুখে দাঁড়ি রেখে ছদ্মবেশ ধারণ করে। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে।
গ্রেপ্তার খাইরুল বশর সুমন মহেশখালী উপজেলার সোনাদিয়া দ্বীপের মৃত মোস্তাক আহমদের ছেলে। সুমন প্রথম দফায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পনকারী জলদস্যুদের একজন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত ২৩ এপ্রিল গুরা মিয়া নামের এক ব্যক্তির মালিকানাধীন একটি ট্রলারের হিমঘর থেকে হাত-পা বাঁধা ১০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ২৫ এপ্রিল ট্রলারটির মালিক নিহত সামশুল আলম প্রকাশ সামশু মাঝির স্ত্রী রোকেয়া বেগম চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৬০ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় হত্যা মামলা করেন।
এ ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা হলেন মামলার এজাহারের প্রধান আসামি বাইট্টা কামাল ও তার ভাই ইমাম হোসেন, বাঁশখালীর বাসিন্দা ফজল কাদের মাঝি ও আবু তৈয়ুব মাঝি, মহেশখালী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর খায়ের হোসেন, চকরিয়ার বদরখালী এলাকার মো. নুর নবীর ছেলে গিয়াস উদ্দিন মুনির, মাতারবাড়ী ইউনিয়নের সাইরার ডেইল এলাকার এস্তেফাজুল হকের ছেলে দেলোয়ার হোসেন ও করিম সিকদার।
তাদের মধ্যে করিম সিকদার ও বাইট্টা কামালের ভাই ইমাম হোসেন ছাড়া বাকি ছয় আসামি আদালতে ১৬৪ ধারার জবানবন্দি দিয়েছেন।
মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, আলোচিত এ ঘটনার পর থেকে তদন্তে দস্যূ সর্দার সুমনের নাম নানাভাবে আসতে থাকে। এরপর থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা চালাতে থাকে।
গ্রেপ্তার সুমনকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুর্জয় বিশ্বাস বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুমন অস্ত্র-সরঞ্জাম ও অর্থ যোগান দিয়ে ৭ এপ্রিল ১২-১৩ জনের একটি গ্রুপকে সাগরে ডাকাতির উদ্দেশ্যে পাঠিয়েছিলেন। এতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ঘটনায় নিহত ট্রলার মালিক শামসুল আলম মাঝি।
জিজ্ঞাসাবাদে সুমন বলেছেন ‘আমি তাদের ডাকাতি করতে পাঠিয়েছিলাম, মারার জন্য না।
সুমনকে রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন এ তদন্ত কর্মকর্তা।