বিশ্ব পর্যটন দিবসে দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে ২৭ সেপ্টেম্বর শুরু হয়েছে সপ্তাহব্যাপি পর্যটন মেলা ও বীচ কার্নিভাল। এই উৎসবকে ঘিরে এখানে রয়েছে জমকালো নানা আয়োজন।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে কক্সবাজার শহরে বর্ণাঢ্য র্যালির পর সৈকতের লাবনী পয়েন্টে এসে মেলার উদ্বোধন করা হয়। এ সময় বেলুন, ফেস্টুস ও শান্তির প্রতীক হিসেবে পায়রা উড়িয়ে দেওয়া হয়।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল এবং প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা।
এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য জাফর আলম, কানিজ ফাতেমা আহমেদ, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী, পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম, ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিওনের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান, বসুন্ধরা গ্রুপের সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মো আবু হেনা, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু তাহের ও সাধারণ সম্পাদক মো. মুজিবুল ইসলামসহ অনেকে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, কক্সবাজার হচ্ছে বাংলাদেশের অন্যতম একটি পর্যটন স্পট। এই কক্সবাজারতে ঘিরে সরকারের বৃহৎ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে। এছাড়াও কক্সবাজার বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং পর্যটন দিবস উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী পর্যটন মেলা ও বিচ কার্নিভাল আয়োজন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
প্রশাসন বলছে, আগত পর্যটকদের চমক দিতে সপ্তাহব্যাপি ভিন্নধর্মী আয়োজন থাকবে উৎসবে।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় সৈকতের লাবনী পয়েন্ট হতে শুরু হয়ে সুগন্ধা পয়েন্ট ঘুরে পুনরায় লাবনী পয়েন্ট পর্যন্ত বর্ণাঢ্য র্যালী বের হয় । এরপর সকাল সাড়ে ৯টায় উদ্বোধন করা হয় পর্যটন মেলা ও বীচ কার্নিভাল। সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে হয় বৃক্ষরোপন, তারপর শুরু হয় আলোচনা সভা। আর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিআইডব্লিউটিএ ঘাট হতে মহেশখালী জেটি পর্যন্ত চলে নৌ র্যালী। এছাড়াও প্রতিদিন বিকাল ৩টায় বিনামূল্যে চলবে সার্কাস প্রদর্শনী। বিকেল সাড়ে ৪টায় বীচ বাইক র্যালী, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, এরপর ডিজে শো এবং আতশবাজি প্রদর্শনী হয়।
২৮ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় রোড শো, বিকেল সাড়ে ৪টায় জেটস্কি শো ও সেমিনার।
২৯ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টায় ঘুড়ি উৎসব, বিকেল সাড়ে ৪টায় সেমিনার, সাড়ে ৫টায় ম্যাজিক শো, সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে ফায়ার স্পিন, সন্ধ্যা ৭টায় লাইফ গার্ড রেসকিউ প্রদর্শনী, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রাত ৯টায় ফানুস উৎসব, রাত ১১টায় ডিজে শো।
৩০ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় সার্ফিং প্রদর্শনী, বিকেল ৩টায় ঘুড়ি উৎসব, বিকাল ৪টায় বীচ ম্যারাথন, বিকেল ৫টায় সেমিনার, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ডিজে শো। ০১ অক্টোবর বিকেল ৫টা সেমিনার ও সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
০২ অক্টোবর বিকেল ৪টায় বীচ ভলিবল, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রাত ৮টায় বিদেশি নাগরিকদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও রাত ১১টায় ডিজে শো। ০৩ অক্টোবর বিকেল ৩টায় সেমিনার, বিকেল ৪টায় পুরস্কার বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠান, বিকেল ৫টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত গ্র্যান্ড সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও কনসার্ট, রাত সাড়ে ১১টায় ডিজে শো ও রাত ১১ টা ৪৫ মিনিটে আতশবাজি প্রদর্শনী।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, সপ্তাহব্যাপি পর্যটন মেলা ও বীচ কার্নিভালে প্রতিদিনই থাকবে নানা আয়োজন। এসবের মধ্যে রয়েছে সার্কাস প্রদর্শনী, বীচ বাইক র্যাপলী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ডিজে শো, আতশবাজি, রোড শো, সেমিনার, ঘুড়ি উৎসব, ম্যাজিক শো, ফায়ার স্পিন, লাইফ গার্ড রেসকিউ প্রদর্শনী, ফানুস উৎসব, সার্ফিং প্রদর্শনী, বীচ ম্যারাথন, বীচ ভলিবল, পুরস্কার বিতরণী ও সমাপনী অনুষ্ঠান এবং কনসার্ট।
মুহাম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, পর্যটক ও দর্শনার্থীদের বিনোদনে এবারের মেলায় রাখা হচ্ছে বিনামূল্যে সার্কাস প্রদর্শনী। লোকাল শিল্পীর পাশাপাশি বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শিল্পীরা আসবেন। আসছেন কুষ্টিয়া লালন একাডেমি ও সিলেট আঞ্চলিক ভাষার শিল্পীরা। এছাড়াও সুনামগঞ্জ থেকে আগত শিল্পীরা পরিবেশন করবেন হাসন রাজার গানসহ আঞ্চলিক ভাষায় নানা গান। ময়মনসিংহ থেকে মহুয়াপালা, কুড়িগ্রাম থেকে ভাওইয়া গানের শিল্পীরা আসবেন। বান্দরবান এবং খাগড়াছড়ি থেকে আসবেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর টিম।
চট্টগ্রাম থেকে আঞ্চলিক গানের খ্যাতিমান শিল্পী প্রেম সুন্দর ছাড়াও আসবেন জাতীয় পর্যায়ের শিল্পীরা। একেকদিন মঞ্চে গাইবেন লিজা, ঐশী, আভাসের তুহিন, রবি চৌধুরী, নিশিতা বড়ুয়াসহ আরও অনেক জাতীয় শিল্পী। ৭ দিন গানে আড্ডায় নানা জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে পর্যটকসহ স্থানীয় দর্শনার্থীদের মাতিয়ে রাখবে পর্যটন মেলা ও বীচ কার্নিভাল।